Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩

বুথে সদলবলে নুরুল, কড়া কমিশন

ফের নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোট চলাকালীন দলবল-সহ বুথে ঢুকে পড়লেন তিনি। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সেই ছবি দেখার সঙ্গে-সঙ্গে সাগরদিঘি বিধানসভার বন্যেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শেখদিঘি হাইস্কুলে পাশাপাশি ওই তিনটি বুথের প্রিসাইডিং অফিসারদের সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।

বিমান হাজরা
সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

ফের নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোট চলাকালীন দলবল-সহ বুথে ঢুকে পড়লেন তিনি। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সেই ছবি দেখার সঙ্গে-সঙ্গে সাগরদিঘি বিধানসভার বন্যেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শেখদিঘি হাইস্কুলে পাশাপাশি ওই তিনটি বুথের প্রিসাইডিং অফিসারদের সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বেলা ৩টে নাগাদ শেখদিঘির ২০, ২১ ও ২২ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন ভাবে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করে ভোট নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে ঘটনার তদন্ত করে বিধিভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করতে।” নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা ভাঙার অপরাধে মামলা করা হয়েছে। ওই তিন প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত।

নুরুল ইসলামের অবশ্য সাফাই, “আমি যখন বুথে ঢুকি তখন সেভাবে ভিড় ছিল না। আমাকে দেখে উৎসাহী কিছু ভোটার বুথে ঢুকে পড়েন। আমি নিজে দলবল নিয়ে বুথের মধ্যে যাইনি। সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ ছড়িয়ে কুৎসা করা হচ্ছে।” তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জঙ্গিপুরের সিপিএম প্রার্থী মুজাফফর হোসেন মনে করিয়ে দেন, “এই একবারই নয়, বার বার নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কখনও সাগরদিঘিতে টাকা বিলি নিয়ে কখনও বাইক মিছিল নিয়ে।”

বৃহস্পতিবার রাজ্যের ছ’টি আসনের মধ্যে জঙ্গিপুরেও ভোট হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরদিঘির বিভিন্ন বুথ ঘুরে এদিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ শেখ নুরুল ইসলাম শেখদিঘি হাইস্কুলে আসেন। সেখানে তিনটি বুথে ঢুকে প্রিসাইডিং অফিসার ও এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকা আরও জনা সাতেক দলীয় কর্মী এই সময় বুথে ঢুকে পড়েন। যার মধ্যে নুরুলের নিরাপত্তারক্ষীরাও ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থী একা বুথে যেতে পারলেও দলবল নিয়ে কখনওই নয়। বিধিভঙ্গের এই ছবি ধরা পড়ে একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। কিছুক্ষণের মধ্যে তা সম্প্রচার শুরু হতেই নড়ে-চড়ে বসে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছে ঘটনার খোঁজ-খবর নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

অপসারিত তিন প্রিসাইডিং অফিসারের মধ্যে অন্যতম ২১ নম্বর বুথের শিবশঙ্কর সাহা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না কোথা থেকে কী হয়ে গেল। তিনি বলেন, “নির্বিঘ্নেই ভোটগ্রহণ চলছিল। দুপুরবেলা বুথে সে ভাবে ভিড়ও ছিল না। আমি টেবিলে কাজ করছিলাম। হঠাৎই নজরে পড়ে বুথের মধ্যে ক্যামেরা নিয়ে ঢুকে পড়েছেন দুই সাংবাদিক। আমি তাঁদের বুথ থেকে বেরিয়ে যেতে বলি। সেই সময় বুথে ঢুকে পড়েন প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলাম।” শিবশঙ্করবাবুর দাবি, “বুথে কত ভোট পড়েছে জানতে চান প্রার্থী। এরপর তিনি তার এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে বুথ ছেড়ে চলে যান। এর মধ্যেই দেখি ওই চিত্রসাংবাদিকরা ছবি তুলছেন। কিছুক্ষণ পরে আমায় নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ আসে। অন্য একজনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসি।” জঙ্গিপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিধিভঙ্গের এই খবর জানতে পেরেই নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম আমরা।”

জঙ্গিপুর নির্বাচন কেন্দ্রে তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন, “একাংশ সংবাদমাধ্যম চক্রান্ত করে এই সব খবর বানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। কমিশনকে ভুল পথে চালিত করছে। ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.