গণ্ডগোলটা চলছিলই, সোমবার রাতে কৃষ্ণগঞ্জের কাশীপুরে সেই জমি নিয়ে বিবাদ প্রায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। তার জেরেই আহত হয়েছেন অন্তত দশ জন। পুলিশ দু’পক্ষের ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গণ্ডগোলটা কেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ স্থানীয় সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, বিবাদের কারণ নিছকই একটি জমির দখলদারি নিয়ে। সেই বিবাদে রাজনীতির রং-ও যে লেগে গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তা-ও জানতে পেরেছথে পুলিশ।
সোমবার রাতে হাঁসুয়া থেকে খেটো বাঁশ, লোহার রড় থেকে ধারাল দা— ব্যবহার হয়েছিল সব কিছুই। তার জেরেই আহত হয়েছেন দশ গ্রামবাসী। আহতদের মধ্যে তিন জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই ওই মাঠটি স্থানীয় ‘মা-মাটি ক্লাবের’ দখলে। এই মাঠে গ্রামের ছেলেরা খেলাধুলোও করে। পুলিশ জানিয়েছে, মাঠের মালিক ছিলেন পাশের স্বর্ণখালি এলাকার বাসিন্দা পুলিন বালা। বছর তিনেক আগে তার কাছ থেকে এই জমি কিনে নেন স্বর্ণখালি ও কাশিপুরে চার বাসিন্দা। ক্লাবের ছেলেপুলদের সঙ্গে বিবাদটা সেই থেকেই। এই নিয়ে এর আগেও একাধিকবার দু’পক্ষের গণ্ডগোল হয়েছে। বোমাবাজিও। দু’পক্ষকে বসিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টাও কম হয়নি। তবে সে কাজে কৃষ্ণগঞ্জ থানা যে সফল নয়, এ দিনেকর ঘটনা তারই প্রমাণ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন গ্রামের ভিতরে ওই মাঠের পাশে পিকনিক করছিল স্থানীয় ছেলেরা। সেখানেই জমি নিয়ে বিবাদ উস্কে উঠেছিল। তা থেকেই তর্কাতর্কি। যা হাতাহাতি গড়াতে সময় লাগেনি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আহতদের কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখান থেকে তাদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ক্লাবের পক্ষে বীরেন বিশ্বাস বলেন, ‘‘জমিটা ক্লাবের দখলে ছিল। আমরা ওদের জমিটা কিনে নেব বলে প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। রাজি হয়নি। গ্রামের মানুষও জমি ছাড়তে রাজি ছিল না।’’ যারা জমি কিনেছে তাদের অন্যতম গ্রামেরই স্বপন বিশ্বাস। অভিযোগ তারই বাড়ির ভিতর থেকে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। তার স্ত্রী কণিকা বিশ্বাস বলে,‘‘এই ঘটনার সঙ্গে জমির কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও আমাদের বাড়িতে এসে ওরা সবাইকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy