Advertisement
২৬ মে ২০২৪

বালিকা নির্যাতনে ১৪ দিনে জেল

বালিকাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ পাওয়ার চোদ্দো দিনের মধ্যে বিচার শেষ করে শাস্তি ঘোষণা করে দিল কৃষ্ণনগর আদালত।

কৃষ্ণনগর
শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৩৯
Share: Save:

বালিকাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ পাওয়ার চোদ্দো দিনের মধ্যে বিচার শেষ করে শাস্তি ঘোষণা করে দিল কৃষ্ণনগর আদালত।

মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর নাজিরাপাড়ার বাসিন্দা বিজন শীলকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। সরকারি আইনজীবী নাসিরুদ্দিন আহমেদের দাবি, “আমরা যত দূর জেনেছি, এত কম সময়ে বিচার শেষ করে রায় দেওয়ার নজির এ রাজ্যে নেই।”

গত ৬ ডিসেম্বর নাজিরাপাড়ার নাপিত বিজন শীলের বিরুদ্ধে আট বছরের বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তার অভিভাবকদের অভিযোগ, মেয়েটির দাদুর দাড়ি কাটতে বাড়িতে এসেছিল বিজন। সেই সময়ে বাড়িতে অন্য কেউ ছিলেন না। মেয়েটিক দাদু খুবই বৃদ্ধ, চোখেও ভাল দেখেন না। সেই সুয়োগে বিজন মেয়েটির উপরে অত্যাচার চালাচ্ছিল। পাশের বাড়ি থেকে এক মহিলা তা দেখে ফেলেন। আরও কয়েক জন মহিলাকে ডেকে নাপিতকে পাকড়াও করেন তিনি। ওই দিনই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। বিজন গ্রেফতার হয়।

পুলিশের দাবি, জেরার সময়েই বিজন অপরাধ কবুল করে নিয়েছিল। মামলার তদন্তকারী অফিসার কমটন রায় তড়িঘড়ি সাক্ষী জোগার করেন। তিন দিনের মাথায়, গত ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা করে পুলিশ। ১২ ডিসেম্বর চার্জ ফ্রেম হয়।

১৫ ডিসেম্বর থেকে ‘প্রোটেকশন অব চিল়ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস’ (পকসো) আইনে বিচার শুরু হয়। ওই আইনের ১০ নম্বর ধারা অনুযায়ী যৌন নির্যাতনে সর্বনিম্ন সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। সাক্ষীসাবুদ বিচার করে বিজনকে দোষী সাব্যস্ত করার পরে সেই সাজাই দিয়েছেন বিচারক।

এই মামলার সরকারি আইনজীবী বলেন, “বালিকার পরিবার প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিল। কিন্তু শুনানির সময়ে যে সাক্ষ্য মেলে তাতে যৌন নির্যাতনের কথা প্রমাণিত হয়েছে। তারই ভিত্তিতে বিচারক সাজা ঘোষণা করেছেন।”

দ্রুত সাজা ঘোষণা হওয়ায় খুশি নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। সংস্থার চেয়ারম্যান রিনা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বারবার চেয়েছি, শিশুদের উপরে নির্যাতন হলে যেন দ্রুত বিচার হয়। এই মামলা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।”

নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়াও পুলিশ এবং আদালতের তৎপরতার প্রশংসা করেছেন। এ দিন বিকেলে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকর্মীরা আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করেছেন যাতে দোষী সাজা পায়। শিশুদের উপরে নির্যাতন হলে বিচারব্যবস্থা কতটা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে, তার উদাহরণ হয়ে রইল এই রায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sexual harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE