Advertisement
E-Paper

তিন মাস পার, ২১ পড়ুয়ার জোটেনি স্কুল

তিন মাস হল চলতি শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। তারপরেও বহরমপুর ব্লকের চরমহুলা মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের ৬৯ জনের মধ্যে ২১ জন পড়ুয়া এখনও নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি! রাঙামাটি চাঁদপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে তিনটে মাধ্যমিক স্কুলকোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দির, মধুপুর রাজা শশাঙ্ক বিদ্যাপীঠ এবং মাঝিরা নুরানি হাই মাদ্রাসা।

শুভাশিস সৈয়দ

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৪

তিন মাস হল চলতি শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। তারপরেও বহরমপুর ব্লকের চরমহুলা মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের ৬৯ জনের মধ্যে ২১ জন পড়ুয়া এখনও নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি!

রাঙামাটি চাঁদপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে তিনটে মাধ্যমিক স্কুলকোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দির, মধুপুর রাজা শশাঙ্ক বিদ্যাপীঠ এবং মাঝিরা নুরানি হাই মাদ্রাসা। মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের এই ৬৯ জন ছাত্রছাত্রীকে এই তিনটি স্কুলে ভর্তি করানো হয়। দায়িত্ব রয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপরে। ওই তিন স্কুল কর্তৃপক্ষকে পঞ্চায়েত জানিয়েছিল, কোন স্কুলে ভর্তি নিতে হবে। সেই মত মধুপুর রাজা শশাঙ্ক বিদ্যাপীঠ ২৩ জন এবং মাঝিরা নুরানি হাই মাদ্রাসা ২৪ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করেও নিয়েছে। কিন্তু, কোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের ভর্তি করেনি। ভর্তি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

কোনও স্কুলে ভর্তি হতে না পেরে ২১ জন ছাত্রছাত্রী অভিভাবকদের নিয়ে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেন। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “শিক্ষার আইনি অধিকার বলে ভাবে ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করা যাবে না। ছাত্রছাত্রীরা যেখানে স্কুলে ভর্তি হতে চাইছে, সেখানে কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ভর্তি নেব না এ কথা বলতে পারে না।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) এবং ওই তিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করে অবিলম্বে সমাধানসূত্র বের করার কথা হয়েছে। আগামী ২৭ তারিখ জেলা প্রশাসন সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করবে। সেখানেই যেন রফাসূত্র বার হয়, চাইছেন ভুক্তভোগী অভিভাবক-পড়ুয়ারা।

চরমহুলা মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের মুখ্য সম্প্রসারক প্রণবচন্দ্র ঘোষ জানান, এ বছর অষ্টম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬৯ জন। ওই ছাত্রছাত্রীদের এলাকার তিনটে স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার কথা। সেই মত স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে স্কুলের দূরত্ব অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের তিনটে স্কুলে ভাগ করে দেওয়া হয়। “বাকি দুটি স্কুল ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নিলেও কোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দির ২১ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করতে রাজি হচ্ছে না” অভিযোগ তাঁর।

কোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক সুভাষ সিমলান্দী বলেন, “২০০৭ সালে ওই মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র চালু হয়েছে। তারপর থেকে গত সাত বছরে ওই স্কুলের কোনও ছাত্রছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হয়নি। এ ছাড়াও দূরত্ব বড় সমস্যা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাছাকাছি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করার কথা বলা হয়েছে।” মধুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ মণ্ডল বলছেন, “ওই প্রধান শিক্ষক ভুল বলছেন। চরমহুলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি ওই কোদলা বিজয়কৃষ্ণ স্কুল।” মধুপুর হাইস্কুলে আবার নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় তিনশো। তিনটে বিভাগ থাকলেও দুটি ক্লাসে ওই ছাত্রছাত্রীদের বসানো হয়। এর উপরে বাড়তি ওই ২১ জনকে ভর্তি করতে হলে পড়াশোনার পরিবেশ থাকবে না বলেও অবরবিন্দবাবু জানান।

মাঝিরা নুরানি হাই মাদ্রাসার মহম্মদ আনারুল হক বলেন, “গত বারও কোদলা বিজয়কৃষ্ণ হাইস্কুল তাদের ভর্তি করেনি। কিন্তু গত বারের চেয়ে এ বছর মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র থেকে নবম শ্রেণীতে ভর্তির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে।”

বহরমপুরের বিডিও বর্ণমালা রায় বলেন, “ওই তিনটে স্কুলে অবিলম্বে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির কথা জানিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

যুক্তি, পাল্টা যুক্তি কিংবা আশ্বাস নয় শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও ক্লাস করতে না পেরে হতাশ পড়ুয়ারা। ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবকদেরও। তাঁরা বলছেন, “অনেক দিন কেটে গিয়েছে। আর টালবাহানা নয়।”

student school madhyamik Baharampur panchayat BDO High Madrasa Kodla headmastar subhasis syed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy