Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দু’টি বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় জখম ৩০

একই লেনের মধ্যে ঢুকে পড়া দুটি বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় ৩০ জন যাত্রী আহত হলেন। রঘুনাথগঞ্জের তালাই মোড়ের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ এই দুর্ঘটনায় ১৮ জনকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বেসরকারি বাস। ইনসেটে, জখম সরকারি বাসের চালক নেবু রায়। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বেসরকারি বাস। ইনসেটে, জখম সরকারি বাসের চালক নেবু রায়। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:১৭
Share: Save:

একই লেনের মধ্যে ঢুকে পড়া দুটি বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় ৩০ জন যাত্রী আহত হলেন। রঘুনাথগঞ্জের তালাই মোড়ের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ এই দুর্ঘটনায় ১৮ জনকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে সরকারি বাসের চালক এবং ওই বাসেরই তিন মহিলা যাত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু’টি বাসের একটি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস, সেটি বাঁকুড়া থেকে বালুরঘাট যাচ্ছিল। অন্য বাসটি বেসরকারি বাসটি রঘুনাথগঞ্জ থেকে বহরমপুর যাচ্ছিল। ইদের আগের দিন বলে দুটি বাসই ছিল ভিড়ে ঠাসা। চার লেনের ঝাঁ চকচকে সড়কে দুটি বাসই যথেষ্ট গতিতে চলছিল।

পুলিশ ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা হিন্দুস্থান কনস্ট্র্রাকশন কোম্পানির তরফে দুর্ঘটনার জন্য সরকারি বাসের চালককে দায়ি করা হয়েছে। কোম্পানির বক্তব্য, চার লেনের রাস্তায় যাওয়া-আসার জন্য দু’টি করে পৃথক পথ রয়েছে। সরকারি বাসের চালক তা না মেনে অন্য লেনে ঢুকে পড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নির্মাণকারী সংস্থার এক কর্তা জানান, কুলোরি গ্রামের কাছে দুটি লেন লাল পাটাতন দিয়ে আটকে রেখে এ দিন সড়ক মেরামতি করছিলেন শ্রমিকেরা। রাস্তা আটকে থাকায় সব গাড়ি অন্য লেন দিয়ে যাতায়াত করছিল। এ ভাবে মাইল চারেক যাওয়ার পরে ফের নিজের লেনে ঢোকার চিহ্নও দেওয়া ছিল। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি বাসটি সিগন্যাল না মানার ফলে মুখোমুখি দুর্ঘটনা হয়েছে।’’

দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন আসানসোল থেকে আসা সরকারি বাসের যাত্রী আতাবুর শেখ। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি বাস গতিতে চলছিল। ভিড় ছিল ভালই। সামনের দিকের সিটে বসেছিলাম। রঘুনাথগঞ্জের উমরপুরে পৌঁছতে মিনিট দশেক বাকি ছিল। অনেকে নামার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন।’’

সরকারি বাসের চালক দুর্গাপুরের লেবু রায়ের অবস্থা সঙ্কটজনক। দুর্ঘটনার পরে দুই বাসের চালককে কোনও রকমে বের করেন স্থানীয় লোকজনেরা। লেবু বলেন, ‘‘মাইল চারেক পরে নিজের লেনে ফিরে আসার সিগন্যাল চোখে পড়েনি।’’ সড়ক নির্মাণের সময় সাধারণত সংস্থার কর্মীরা দাঁড়িয়ে থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন। এ দিন তা-ও ছিল না বলে দাবি লেবুর।

সরকারি বাসের চালকের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন অন্য যান চালকেরাও। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত চালকের বক্তব্যের সমর্থন মিলেছে। রাস্তা সারাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। কিন্তু দুর্ঘটনার পরেও সেখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই চোখে পড়েনি। তার ফলে একই লেন দিয়ে বেশির ভাগ গাড়িকে এ দিন বিপদের ঝুঁকি নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে।

ফের দুর্ঘটনা হলে কী হত? নির্মাণকারী সংস্থার কর্তার দাবি, লেন পরিবর্তনের জন্যে সিগন্যাল ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে। গাড়ির চালকেরা তা দেখে সহজেই এক লেন থেকে অন্য লেনে যেতে পারবেন। ঘটনাস্থলে কোনও কর্মীকে রাখা হল না কেন? যথেষ্ট কর্মী না থাকার সাফাই দিয়েছেন ওই কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE