Advertisement
E-Paper

বিধি ভাঙায় আটক ৩০০

সকালে আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোই শুরু করেছিল রঘুনাথগঞ্জ কিংবা জঙ্গিপুর।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০২:৫২
লকডাউন: বহরমপু শুনশান রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

লকডাউন: বহরমপু শুনশান রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

দিনভর পুলিশি টহল, গলির মুখে মাইক হাতে, উর্দিধারীদের লকডাউনে ঘরে থাকার অনর্গল হুঁশিয়ারি, রাস্তায় বাইক-সাইকেলের দাপট দেখলেই পাকড়াও করে চাকার হাওয়া খুলে দেওয়ার শাস্তি— রাজ্য জুড়ে বুধবার সাপ্তাহিক লকডাউনে মুর্শিদাবাদে পুলিশি সক্রিয়তা বজায় থাকলেও রাস্তাঘাটে, আড়ালে আবডালে মানুষের চলাচল চোখ এড়াল না। বহরমপুর থেকে ডোমকল, জঙ্গিপুর কিংবা বেলডাঙা দোকানপাট বন্ধ থাকলেও ইদের মুখে লকডাউনের বিকেল থেকে লুকিয়ে চুরিয়ে বিকিকিনির খবরও মিলেছে। তবে জেলা পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, লকডাউন হয়েছে সম্পূর্ণ। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার জানিয়েছেন, ‘‘৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে জেলা জুড়ে, পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সরকারি বয়ানের সঙ্গে দিনভরের জেলা-ছবি না মিললেও পুলিশের দাবি, মানুষের স্বেচ্ছা ঘরবন্দিতে পুলিশি দৌড়ঝাপ কিছুটা কমেছে।

তবে সকালে আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোই শুরু করেছিল রঘুনাথগঞ্জ কিংবা জঙ্গিপুর। আর তার জেরেই বেলা গড়াতেই রাস্তা বা পাড়ার মোড়ে দাঁড়ানো পুলিশ তার রাঙা চোখ দেখাতে শুরু করে।

ডোমকল, ইসলামপুর, লালগোলা এমনকি জেলা সদর বহরমপুরের ক্ষেত্রেও একই ভাবে কঠোর হয়ে রাস্তায় অকারণ ঘোরাফেরা করার প্রবণতা ঠেকাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। রাস্তায় মুখে আবরণহীন লোকজন, কিংবা সাইকেল-মোটরবাইকের চলাচল, কিংবা এমনিই ‘কেমন লকডাউন হচ্ছে’ অজুহাতে পথে বেরনো লোকজনকে আটকে প্রথমে পরিচয়পত্র দেখা শুরু করে পুলিশ। পথে বের হওয়ার কারণ সন্তোষজনক না হলে শুরু হয় আটক করা।

বহরমপুর থেকে হরিহরপাড়া, বহু জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদের পরে সাইকেল এমনকি মোটরবাইকের চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয়। পুলিশের এই অনড় মনোভাবের খবরটা চাউর হতেই অকারণ পথে বেরনোও ক্রমশ কমে আসে। কান্দি মহকুমার কান্দি, বড়ঞা, ভরতপুর, সালার ও খড়গ্রাম থানা এলাকা থেকে একই কারণে ১২ জনকে লকডাউন বিধি ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য তাদের জামিনও দেওয়া হয়।

দৈনন্দিন বাজারহাট জেলা জুড়েই বন্ধ ছিল এ দিন। হাসপাতাল খোলা থাকলেও রোগীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। লকডাউন উপেক্ষা করে কেউ বাড়ির বাইরে বের হলেই পুলিশের কাছে জবাবদিহি করতে হয়েছে। তবে এরই মধ্যে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে নামে ভিন রাজ্য ফেরত বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিক। পুলিশ তাঁদের হাতে জলের বোতল তুলে দেয়, তার পর অনুমতি দেয় বাড়ি যাওয়ার। পায়ে হেঁটেই গ্রামের দিকে হাঁটতে থাকেন তাঁরা। আবার হোটেল খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় এলাকার ভবঘুরে, মানসিক ভারসাম্যহীনদের হাতে দু’বেলা খাবার পৌঁছে দেয় হরিহরপাড়া থানা।

তবে পুলিশের এই ‘নরম মনে’র সুযোগ নিয়েই বেলার দিকে নেহাতই লকডাউনের চেহারা দেখব বলে বাইরে পা রেখেছিলেন অনেকে। তাদের পাকড়াও করতে সময় নেয়নি পুলিশ। বুধবার বিড়ি মহল্লা অরঙ্গাবাদে রাস্তায় বেরনো এক দঙ্গল কিশোর, তরুণকে ধরে তাদের দিয়েই লকডাউনের স্বপক্ষে প্রচার করাল পুলিশ। শুধু তাই নয়, পুলিশের মাইক ধরে তাদের বলতে হল, ‘করোনা রুখতে সকলের উচিত বাড়িতেই থাকা!’ অবশ্য মাইকে কিছু বলতে না পারায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা করেছে পুলিশ।

এরই মাঝে সৈয়দাবাদ এলাকায় একাধিক বিয়ে অনুষ্ঠানে মাস্ক ছাড়া ঘুরতে দেখা গিয়েছে ওই বাড়ির সদস্যদের। দাবি ছিল, বিয়েতে পুলিশের অনুমতি আছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘মানুষ নিজে একটু সচেতন না হলে কী সব কিছু মেরে-ধরে করা যায়!’’

West Bengal Lockdown Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy