রানাঘাটের ক্লাবের ৫১ ফুটের সরস্বতী প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
ইচ্ছা ছিল, সবচেয়ে বড় দুর্গামূর্তি গড়ে তাক লাগানোর। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় নদিয়ার রানাঘাটের কামলপুর অভিযান সঙ্ঘের সেই অভিযান সফল হয়নি। তবে দুর্গাপুজোর ১১৫ দিনের মধ্যে আবার চমক দিল রানাঘাটেরই অন্য এক ক্লাব। রজতজয়ন্তীতে ৫১ ফুটের সরস্বতীর প্রতিমা নিয়ে হাজির হয়েছে সংগ্রামী সঙ্ঘ। মজার বিষয়, ‘বাংলার সবচেয়ে বড় দুর্গা’ এবং ‘সর্ববৃহৎ সরস্বতী’র শিল্পীরা এক। ৫১ ফুটের সরস্বতী প্রতিমা দর্শনের জন্য জমজমাট ভিড় মণ্ডপে। এ বার আর কোনও প্রশাসনিক সমস্যায় পড়তে হয়নি। তাঁদের শৈল্পিক প্রচেষ্টা জনসমক্ষে আসায় খুশি শিল্পীরা। বলাই বাহুল্য, বাগ্দেবীর বন্দনায় দর্শনার্থী টানতে পেরে খুশি উদ্যোক্তারাও।
গত বছরের অক্টোবরে ১১২ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরির ঘোষণা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল রানাঘাটের কামালপুর অভিযান সঙ্ঘ। তাদের দাবি ছিল, এটিই হবে ‘বাংলার সবচেয়ে বড় দুর্গা’। কিন্তু পুলিশ ওই পুজোয় অনুমতি দেয়নি। কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন উদ্যোক্তারা। আদালতে প্রশাসন জানায়, কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনা মাথায় রেখে ওই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। বস্তুত, ২০১৫ সালে ৮৮ ফুটের প্রতিমা তৈরি করে দেশপ্রিয় ক্লাব। কিন্তু ভিড় সামলাতে হিমসিম খায় পুলিশ। পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় পঞ্চমীর দিনই মণ্ডপে দর্শনার্থী ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রানাঘাটের পুজোর ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করে জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নিতে বলে হাই কোর্ট। শেষমেশ অনুমতি মেলেনি বলে ১১২ ফুটের দুর্গাও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে ৫১ ফুটের সরস্বতী নিয়ে কোনও ঝামেলা পোয়াতে হয়নি রানাঘাটের ক্লাবকে। সংগ্রাম সঙ্ঘের সম্পাদক অরিজিৎ পাল বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় কামালপুর সর্ববৃহৎ দুর্গা করতে চেয়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক কারণে তা আটকে গিয়েছিল। সে কথা মাথায় রেখে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আমরা সর্ববৃহৎ সরস্বতীর আরাধনায় হাত দিয়েছি।’’ ক্লাবের কর্মকর্তারা জানান, রজত জয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে এক বছর ধরে সরস্বতী পুজোর পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। ছিল অন্য রকম কিছু একটা করার ভাবনা। ৫১ ফুটের সরস্বতী প্রতিমা তার ফলশ্রুতি। সরস্বতী মূর্তির পুরোটাই ফাইবার দিয়ে তৈরি। প্রতিমা গড়তে সময় লেগেছে প্রায় চার মাস। এ বার নদিয়া জেলার ‘অন্যতম’ সরস্বতী পুজো হিসাবে নজর কেড়েছে রানাঘাটের ক্লাব। প্রতিমাশিল্পী সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের তৈরি দুর্গাপ্রতিমা মানুষের সামনে তুলে ধরতে না পেরে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলাম। ক্লাবের পরিচিত কয়েক জন যখন আমাকে ৫১ ফুটের সরস্বতী প্রতিমা তৈরির প্রস্তাব দিলেন, খানিকটা অক্সিজেন পেলাম যেন। মন দিয়ে কাজটা করেছি। যখন দর্শকেরা ভিড় করে প্রতিমা দর্শন করছেন, সেটা দেখে খানিক হলেও সে দিনের গ্লানি লাঘব হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy