বাংলা মন্ত্র উচ্চারণ করে অঞ্জলি দিল পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতি বছরের মতো এ বারও সরস্বতী পুজোয় অঞ্জলি দেবে বলে পূর্ব বর্ধমানের মশাগ্রামের সারদা মিশন স্কুলে ভিড় করেছিল পড়ুয়ারা। আর দশটা স্কুলের মতো পুজোর দিন সকাল থেকে সারদা মিশনে আনাগোনা কিশোর-কিশোরীদের। তবে অন্য বারের মতো এ বার সংস্কৃতে নয়, বাংলায় মন্ত্র পড়ে পুজো দিলেন পুরোহিত। বাংলা মন্ত্র পড়ে অঞ্জলি দিল পড়ুয়ারা। বসন্ত পঞ্চমীতে এমন ভাষাবিপ্লবে আলোড়ন এলাকায়। পাঁচকান হতেই পুজো দেখতে ওই স্কুলে ভিড় জমালেন স্থানীয়েরা। বাংলা মন্ত্রে পুজো চাক্ষুষ করতে পূর্ব বর্ধমানের স্কুলে গিয়েছিলেন ভাষাবিদ পরিত্র সরকার, কবি অংশুমান করেরা। আর এক কবি মারুত কাশ্যপ কবিতার ছন্দে সংস্কৃত মন্ত্রের বাংলা অনুবাদ করেছেন।
মারুতের ফেসবুক পোস্ট দেখেও মশাগ্রামের সারদা মিশন স্কুলের পুজো দেখার কৌতূহল তৈরি হয়েছিল অনেকের মধ্যে। কবি রবিবার সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘সরস্বতী পুজো শুরু হয়েছে অনেক জায়গায়। আর এক বার মনে করিয়ে দিই, আগামিকাল (সোমবার) আমাদের সারদা মিশনে পুজো। সবাইকে বাংলা মন্ত্রে সরস্বতী পুজো দেখার জন্য আন্তরিক আমন্ত্রণ জানাই।’’ সোমবার ‘সম্পূর্ণ বাংলায় শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা পদ্ধতি’ নামে বইর উদ্বোধনও হয়েছে। স্কুলের এক প্রাক্তনীর কথায়, ‘‘এই ঘটনা আর কোথাও ঘটেছে, জানা নেই। কিন্তু শহর থেকে অনেক দূরে বাংলার একটি গ্রামে এই সরস্বতী পুজো যে অভিনব, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’’ প্রথম বার বাংলায় অঞ্জলি দিয়েছে প্রেমজ্যোতি ঘোষ নামে এক খুদে ছাত্রী। তার কথায়, ‘‘এর আগে মানে না বুঝেই অঞ্জলি দিয়েছি। আজ মানে বুঝে অঞ্জলি দিলাম।’’
পুজো দেখতে ভাষাবিদ পবিত্র সরকার, কবি অংশুমান কর। —নিজস্ব চিত্র।
মশাগ্রামের স্কুলের সরস্বতী পুজোর অভিনবত্ব নিয়ে ভাষাবিদ পবিত্র বলেন, ‘‘মারুতকে (কবি) অভিনন্দন এ কাজে হাত দেওয়ার জন্য। সারদা মিশন কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ এই রকম একটা অনুভব তৈরির জন্য।’’ আর কবি তথা অনুবাদক মারুতের কথায়, ‘‘প্রথমে অনেক দ্বিধা নিয়ে এ কাজে হাত দিয়েছিলাম। যত কাজ এগিয়েছে, তৃপ্তি অনুভব করেছি। কবিতার ছন্দে মন্ত্র গেঁথেছি, মাধুর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য।’’
এমন উদ্যোগের সূচনা কী ভাবে? সারদা মিশনের অধ্যক্ষ চন্দন সাঁধুখা জানান, অনেক দিন ধরে তাঁরা এই পদক্ষেপের কথা ভেবেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মাকে নিজের ভাষায় ডাকতে পারার আনন্দই আলাদা। আমরা মন্ত্র সংস্কৃতে বলি, প্রার্থনা কিন্তু নিজের ভাষা বাংলায় করি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে এই কাজটা যে এ বছর শেষ করা যাবে, ভাবিনি। এই মন্ত্র নিয়ে বইটি সাধারণের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy