Advertisement
E-Paper

বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে রুখল ছাত্রী

ধুবুলিয়ার সুভাষচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী কণিকা। বাড়ি ধুবুলিয়ার ১৯ নম্বর গ্রুপে। বাবা উত্তম দাস রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সম্প্রতি পড়ে গিয়ে তাঁর হাত ভেঙেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৯
বিয়ে বন্ধের পর স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে কণিকা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বিয়ে বন্ধের পর স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে কণিকা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

কিছুতেই বোঝানো যায়নি বাবা-মাকে। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রধান শিক্ষিকার কাছে চলে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী। কান্না ভেজা গলায় বলেছিল, “আমাকে বাঁচান দিদি। আমি বিয়ে করতে চাই না। পড়তে চাই। প্রয়োজনে পুলিশের কাছে যেতেও রাজি আছি।” শিক্ষিকাই খবর দেন পুলিশকে। আটকে দেওয়া হয় নাবালিকার বিয়ে। বছর পনেরোর কণিকা দাসের সাহসের তারিফ করেছেন শিঙিকা ও পুলিশ কর্মীরা। জানিয়েছেন, পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবরকম সাহায্য করবে প্রশাসন ও স্কুল।

ধুবুলিয়ার সুভাষচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী কণিকা। বাড়ি ধুবুলিয়ার ১৯ নম্বর গ্রুপে। বাবা উত্তম দাস রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সম্প্রতি পড়ে গিয়ে তাঁর হাত ভেঙেছে। অভাবের চাপে শম্ভুনগরে পাত্রের সন্ধান পেয়ে তিনি মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মেয়ে পড়াশোনা শিখে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্ন চুরমার হতে বসেছে টের পেয়ে বাবা-মায়ের কাছে অনেক অনুরোধ জানিয়েছিল সে। লাভ হয়নি। উল্টে তাঁরা জোর করে বিয়ে দিতে চাইছিলেন বলে অভিযোগ।

প্রথমে স্কুলের এক শিক্ষিকাকে সে সমস্যার কথা জানায়। তিনি জানান প্রধান শিক্ষিকাকে। স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের নিয়ে কণিকার বাড়িতে হাজির হন তিন শিক্ষিকা। তাঁরা মা ও বাবাকে বুঝিয়ে আসেন। বিয়ের তোড়জোড়ের বিষয়টি তাঁদের কাছে তখন অস্বীকার করেন কণিকার অভিভাবকেরা। দিন কয়েক চুপচাপ থেকে ফের ভিতরে-ভিতরে বিয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। কণিকার প্রতিবাদেও লাভ হয় না। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একবস্ত্রে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক সহপাঠীর বাড়ি আশ্রয় নেয় সে। পর দিন ভোরে চলে যায় স্কুলে। প্রধান শিক্ষিকা খবর দেন পুলিশে।

ধুবুলিয়া থানায় ওসিকে লিখিত ভাবে কণিকা জানায়, বাবা-মা তাকে জোর করে বিয়ে দিতে চাইছেন। আর দেরি করেনি পুলিশ। বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয় কণিকার বাবা-মাকে। প্রথমে তাঁরা মানতে চাননি। কিন্তু মেয়ে যখন জোর দিয়ে অভিযোগ করতে থাকেন তখন তাঁরা আর অস্বীকার করতে পারেননি। জানিয়েছেন, সংসারে অভাবের কারণে তাঁরা বড় মেয়ের বিয়ের ঠিক করেছিলেন। এ বার নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আঠারো বছরের আগে আর মেয়ের বিয়ে দেবেন না।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আফ্রোজা পারভিন বলেন, “আমরা এক বার গিয়ে মেয়েটির বাবা-মাকে বুঝিয়ে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম, ওঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আর বিয়ে দেবে না। কিন্তু তা হয়নি।” তিনি বলেন, “আজ মেয়েটির কাছে সব শুনে বুঝলাম যে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া বিয়েটা আটকানো যাবে না। সেই কারণেই পুলিশকে সব জানাই।”

Girl Student Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy