Advertisement
E-Paper

রক্ত দিতেই ছুটছেন ‘ওঁরা’

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জেলা ব্লা়ড ব্যাঙ্কে কোনও গ্রুপের রক্ত নেই। এতটাই আকাল চলছে যে রক্তের অভাব মেটাতে রানাঘাট ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে ৬০ প্যাকেট  রক্ত নিয়ে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২৭
রক্তের জন্য অপেক্ষা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।

রক্তের জন্য অপেক্ষা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জেলা ব্লা়ড ব্যাঙ্কে কোনও গ্রুপের রক্ত নেই। এতটাই আকাল চলছে যে রক্তের অভাব মেটাতে রানাঘাট ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে ৬০ প্যাকেট রক্ত নিয়ে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রক্তের সঙ্কট মেটাতে রোগীর বাড়ির লোকজনকে ‘ডোনার’ সঙ্গে করে নিয়ে আসার পরামর্শ দিচ্ছে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় রক্তের অভাব মেটাতে রোগীর পাশে দাঁড়িয়েছেন মুর্শিদাবাদ ব্লাড ডোনার্স ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি ওই সংগঠনের সদস্যরা বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ নয়, মুর্শিদাবাদের বাইরে কলকাতার নীলরতন মেডিক্যাল কলেজের ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দিয়েছেন।

যেমন ওই সংগঠনের এক সদস্য গত শুক্রবার এনআরএস ব্লাড ব্যাঙ্কের কাছ থেকে জানতে পেরে বেথুয়াডহরি থেকে তাঁদের দুই সদস্য আকিব জাভেদ ও অঙ্কিত শেখ কলকাতা গিয়ে রক্ত দিয়েছেন। সোমবার আরও ছ’জন রক্তদাতা যাবেন। এমনকি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত জলঙ্গির ছ’বছরের বালিকা রামিজা খাতুনকে বুধবার রক্ত দিয়ে বাঁচিয়েছেন সংগঠনের সদস্য সালারের যুবক প্রিন্স খোন্দেকার। একই ভাবে রানিনগরের বিমলা মণ্ডলের রক্তের প্রয়োজনের কথা জানতে পেরে গত শনিবার রক্ত দিয়েছেন ভঞ্জন মণ্ডল। ওই দিনই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শুভাশিস মিত্রের রক্তের দরকার জানতে পেরে রক্ত দিয়েছেন টোটন নামে সংগঠনের আরও এক সদস্য।

সংস্থার সভাপতি পার্থসারথি দত্ত ও সম্পাদক মানোয়ারুল ইসলাম একযোগে জানান, উৎসব মরসুমে এখন বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকাল চলছে। অথচ মুমূর্ষু রোগীদের রক্তের প্রয়োজন। সেই কথা ভেবেই সাড়ে পাঁচশো জন রক্তদাতাদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি পড়শি জেলা নদিয়াতেও তাঁদের সদস্যরা রয়েছেন। মুর্শিদাবাদে এ ভাবেই বেশ কয়েক জন রোগীর কাছে মুশকিল আসান হয়ে উঠেছেন মুর্শিদাবাদ ব্লাড ডোনার্স ব্যাঙ্কের সদস্যরা। শুভাশিস ও বিমলারা বলছেন, ‘‘ওই সদস্যরা রক্ত দিতে এগিয়ে না এলে কী যে হতো! ভাবতেই পারছি না।

জেলা ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর উৎসব-পার্বণের সময়ে রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমে যায়। রক্তদান শিবির না হলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক রক্ত পাওয়া যায় না। প্রয়োজনীয় সংখ্যক রক্তের অভাবে ভুগতে থাকে বিভিন্ন ব্লাডব্যাঙ্ক। চাহিদার সঙ্গে জোগানের ফারাক দেখা দেয়।

জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রভাসচন্দ্র মৃধা বলছেন, ‘‘উৎসবের রেশ এখনও কাটেনি। এইসময় কোনও রক্তদান শিবির না হওয়ায় রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে। কোনও গ্রুপের রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে নেই। রক্তের অভাব মেটাতে রোগীর বাড়ির লোকজনকে ডোনার সঙ্গে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। মুমূর্ষু রোগীদের এখন ভরসা বিভিন্ন রক্তদাতা ও সংগঠন।’’

এ দিকে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে যখন রক্তের আকাল চলছে, তখন ব্লাড-ডোনার্স ব্যাঙ্কের সদস্যরা এক পায়ে রক্ত দিতে তৈরি। হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুকের মাধ্যমে রোগীর রক্তের কথা জানতে তাঁরা ছুটে যাচ্ছেন স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে। তাঁদের ওই উদ্যোগকেও কুর্নিশ জানাচ্ছেন ডাক্তার থেকে রোগীর আত্মীয় সকলেই।

Blood bank Blood donation রক্তদান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy