Advertisement
E-Paper

ফের ‘বোমা’র আতঙ্ক চাকদহে

থানায় ফোনটা এসেছিল সাত সকালেই— স্যার, শিকারপুর থেকে বলছি, আবার বোমা স্যার! বাড়ির সামনেই পড়ে রয়েছে, আসুন স্যার, যে কোনও সময়ে ফেটে যাবে কিন্তু!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০১:২৪

থানায় ফোনটা এসেছিল সাত সকালেই— স্যার, শিকারপুর থেকে বলছি, আবার বোমা স্যার! বাড়ির সামনেই পড়ে রয়েছে, আসুন স্যার, যে কোনও সময়ে ফেটে যাবে কিন্তু!’’

তড়িঘড়ি ছুটে ছিল চাকদহ থানার পুলিশ। ততক্ষণে শিকারপুর বাজার এলাকায় বাড়িটার সামনে থিকথিকে ভিড়। নিরাপদ দূরত্বে জটলা করে কপালে বাঁজ ফেলে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। কারও বা কপালে ভাঁজ— ‘‘এলাকায় আর থাকা যাবে না বুঝলেন!’’ ভাবাই স্বাভাবিক। ভোট মেটার দিন কয়েক পর থেকেই শুরু হয়েছিল শাসক দলের হুমকি-চোখ রাঙানি। দিন সাতেক ধরে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নয়া আশঙ্কা, বাড়ির সামনে বোমা কিংবা শ্বেতশুভ্র থান রেখে যাওয়া। সঙ্গে ত্যাড়া বাঁকা হাতের লেখায় শাসানি। সেই তালিকায় ফের সংযোজন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছেই দেখে, বাড়ির সামনে কিছু একটা পড়ে রয়েছে । আপাত ভাবে দেখলে মনে হবে বোমা । ভিড় সরিয়ে ভয়ে ভয়ে সুতলি বাঁধা গোলাকৃতি বস্তুটা পাশের পুকুরে ফেলে দেয় পুলিশ। কিন্তু ও মা! পুকুরে তলিয়ে যাওয়ার বদলে ঘুপ করে পের ভেসে ওঠে সেটা। খুলে দেখা যায়, নিতান্তই একটা প্লাস্টিকের বলের উপর কাপড় ও সুতলি জড়ানো—বোমার ভয়!

এলাকার বাসিন্দা সাধন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আর বলবেন না। বোমা হোক না ভয়টা তো ছড়িয়ে দিল। এ বাবে আতঙ্কে বৌ-বাচ্চা নিয়ে থাকা যায়?’’ পড়শিরা আলোচনা করছেন, ‘‘আজ না হয় বোমা নয়, কিন্তু এ বাবে ভয় দেখানোর মানেটা কী?’’ যা শুনে সাইকেলে ফিরে যাওয়ার আগে এক যুবক ফোঁড়ন কেটে যাচ্ছেন, ‘‘ওদের (তৃণমূল) দিন শেষ হয়ে এসেছে কাকীমা, তাই আসল বোমাও ফেলতে পারছে না!’’ যা শুনে গজগজ করতে থাকেন অন্য এক বাসিন্দা কানাই সরকার, ‘‘আগে টিভির এ সব দেখতাম, এখন বাড়ির সামনে দেখছি। কী দিনকাল পড়ল!’’

বুধবার ভোরে শিকারপুরে কালিগঞ্জ-কালিপুর যাওয়ার রাস্তার ধারে রবীন্দ্রনাথ শীলের বাড়ির ঘটনাটা এখনও দগদগে ক্ষতর মতো ছড়িয়ে আছে এলাকায়। ওই সিপিএম কর্মীর টিনের ঘরের পাশে সাদা থান আর তাজা বোমা রেখে কাগজের উপরে সতর্কবার্তা দিয়ে গিয়েছিল কেউ। সে বার্তায় স্পষ্ট ছিল, তোপটা দেগেছে তৃণূল কর্মীরাই।

ওই ঘটনায় অভিযোগ পেয়েও পুলিশ অবশ্য কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে পুলিশের নজরদারিতে যে জনা তিনেক যুবক রয়েছে তা জানা গিয়েছে। জেলার এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘তারা যে শাসক দলের ঠ্যাহারে বাহিনীর ছেলে তা আর বলে দিতে হয়!’’

এ দিন ফের বোমার খবর শুনে । রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘বড় আতঙ্কে আছি, কোন রাজত্বে বাস করছি বলুন তো!’’ সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক রুপক সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য বোমা সিল্প ফেঁদেছে তৃণমূল। সে দিন ব্যবহার করতে পারেনি তাই রবীন্দ্রনাথের বাড়ির সামনে রেখে গিয়েছিল। এখন ভোটে হেরে যাবে বুঢতে পেরে ত্রাস তৈরি করতে চাইছে।’’

তবে, ওই কাজ যে তাদের নয় আগেই জানিয়ে ছিল তৃণমূল। কল্যাণী ব্লক তৃনমূল সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমদের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।’’

তবে ওই ঘটনা কিংবা এ দিনের মিথ্যা-বোমার আগেও, চাকদহ এলাকায় বোমাতঙ্ক যে নতুন নয়। ৩০ এপ্রিল বাজারে একটি সাইকেল গ্যারেজের সামনে একই বাবে কেউ রেখে গিয়েছিল বোমা। নির্বাচনের দু’দিন আগেও বোমা মিলেছিল বাজারের একটি স্টেশনারি দোকানের সামনে।

সেই ট্রাডিশন সমানে চলছে!

tmc Chakda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy