বাবলু দাস। নিজস্ব চিত্র
চারটে হাসপাতাল ঘুরে নদিয়ার বাবলু দাসের অবশেষে ঠাঁই হয়েছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার আগে পলাশিপাড়া হাসপাতাল থেকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল, সেখান থেকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল হয়ে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি রয়েছে বলে কলকাতার ওই সরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পরিবারের লোকজনের। বেগতিক দেখে ওই পরিবারের লোকজন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তির বন্দোবস্ত করেন।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলার শল্য চিকিৎসক গৌতম বিশ্বাস জানান, ওই রোগীকে যখন নিয়ে আসা হয়েছিল, তত দিনে চার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর ওই রোগী আত্মহত্যা করার জন্য ধারাল কিছু দিয়ে নিজের গলা কাটার চেষ্টা করেন। তাতে গলা গভীর ভাবে কেটে যায়। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে গত ১ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, তখন ওই রোগীর হিমোগ্লোবিন ৫ মিলিগ্রাম। যে কোনও সময়ে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারতেন। এছাড়াও সেপ্টিসেমিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গলায় গভীর ভাবে কেটে যাওযায় যে ক্ষতস্থান তৈরি হয়েছিল, তাতে শ্বাসনালী ও খাদ্যনালী ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের আগে গলায় ট্র্যাকিওস্টেমি টিউব দিয়ে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র তৈরি করে অজ্ঞান করা হয়েছিল ওই রোগীকে। গৌতম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘অস্ত্রোপচারে চার ঘণ্টা সময় লেগেছে। খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীর ক্ষতস্থান মেরামত করার পাশাপাশি গলার ক্ষতস্থান মেরামত করতে হয়েছে। ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার ছিল। অস্ত্রোপচার চলাকালীন যে কোনও সময়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত তাঁর।’’ তবে এ ক্ষেত্রে অজ্ঞানের চিকিৎসক তপোব্রত মিত্র বড় ভূমিকা গ্রহণ করেন। এছাড়াও অস্ত্রোপচার দলে গৌতম বিশ্বাসের সঙ্গী ছিলেন চিকিৎসক রাজু মণ্ডল এবং এসএন ভট্টাচার্য। গৌতম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘ওই রোগী এখন সুস্থ এবং ঘটনার পরে যিনি চার দিন খেতে পারেননি কিছু, সেই রোগী এখন স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy