ছাত্রদের তাণ্ডব দেখে বিরক্ত হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। স্পষ্টই জানিয়ে ছিলেন— দল বিচার না করে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে।
সে পথে অবশ্য হাঁটার সাহস দেখাল না কান্দি পারুলিয়ার হরিচরণ হাইস্কুল। সেন্টার ফি বিতর্কে পিছু হটে সে টাকা শেষতক মকুব করার সিদ্ধান্ত নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশও এ নিয়ে বিশেষ এগোতে চায়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে নালিশ না করলে আগ বাড়িয়ে স্কুলের ব্যাপারে নাক গলাতে যাব কেন!’’
বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড নিতে স্কুলে এসে ছেলেমেয়েরা দেখে, কার্ড পেতে গেলে গুনতে হবে ৯০ টাকা সেন্টার ফি। তাদের দাবি, অন্য স্কুলে ৫০ টাকা হলেও তাদের স্কুলে সেন্টার ফি আরও চল্লিশ টাকা বেশি। সেই ক্ষোভ থেকেই কথা কাটাকাটি গড়ায় তাণ্ডবে।
ছাত্রদের দাবি ছিল, শুধু সেন্টার ফি নয়, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময়েও তাদের কাছে পাঁচশো টাকা নিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। অথচ এলাকার অন্য স্কুলে সে ফি নেওয়া হয়েছিল তিনশো টাকা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলিমের দাবি ছিল, ‘‘স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়েছিল। এখন সবাই বেঁকে বসলে কী করা যাবে।’’ স্কুলের পড়ুয়ারা অবশ্য বাড়তি টাকা নেওয়ার জেরে, বুধবার প্রায় ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল হরিচরণ স্কুল। কম্পিউটার থেকে আলমারি, টেবিল-বেঞ্চ, ক্লাস ঘরের পাখা— বাদ রাখেনি কিছুই। তাদের তাণ্ডব দেখেই ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘এ সব বরদাস্ত করা হবে না।’
এ দিন সেন্টার ফি-র প্রশ্নে পিছু হটার পাশাপাশি, ভর্তির সময়ে নেওয়া বাড়তি ওই টাকাও ফেরত দেওয়া হল ছেলেমেয়েদের। এ দিন, স্কুলে আসেননি আব্দুল আলিম। দায়িত্বে ছিলেন স্কুল শিক্ষক কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সেন্টার ফি কেন নেওয়া হচ্ছে না, প্রশ্ন করবেন না। আমি, স্কুল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করছি মাত্র।’’ বিষয়টা এড়িয়ে গিয়েছেন, স্কুলের প্রশাসনিক আধিকারিক, খড়গ্রাম ব্লকের অবর স্কুল পরিদর্শক জাহাঙ্গির কবীর। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমার কিচ্ছু জানা নেই, বলারও নেই।”
তবে, টাকা ফেরত দেওয়া দেখে অবাক হয়ে গিয়েছে পড়ুয়ারা। বিস্মিত দেলোয়ার শেখ যেমন বলছে, ‘‘কেনই বা সাড়ে পাঁচশো টাকা নেওয়া হল, আর এত দিন পরে তা ফিরিয়েই বা দেয়া হল কেন, বুঝতেই পারছি না।’’