Advertisement
E-Paper

প্লাগ-পয়েন্টে এখনও ঝলসায় আগুন

দু’বছর আগে ওই অগ্নিকান্ডের পরে হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়নি, এমন নয়। তবে, কপালে ভাঁজ ফেলে হাসপাতালের এক কর্তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ব্যবস্থা তো নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সময়ে তা কতটা কাজে লাগানো যাবে তা নিয়ে একটা সংশয় রয়েই গিয়েছে।’’ কেন?

প্রাণময় ব্রহ্মচারী

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৪১
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ।

দু’টো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবে, ধোঁয়া-ধুলো-কান্নার সেই দগ্ধ স্মৃতিটা এখনও রয়ে গিয়েছে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের দেওয়াল জুড়ে। বুধবার কলকাতা মেড্যিক্যাল কলেজে আগুন লাগার পরে সেই আঁচটাই যেন ফিরে এসেছে বহরমপুরের ওই হাসপাতালের চত্বরে।

দু’বছর আগে ওই অগ্নিকান্ডের পরে হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়নি, এমন নয়। তবে, কপালে ভাঁজ ফেলে হাসপাতালের এক কর্তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ব্যবস্থা তো নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সময়ে তা কতটা কাজে লাগানো যাবে তা নিয়ে একটা সংশয় রয়েই গিয়েছে।’’ কেন?

ওই আগুন লাগার ঘটনার পরে, প্রতিটি ওয়ার্ডে আপতকালীন অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হল তার ব্যবহার সম্পর্কে হাসপাতালের কর্মীরা কতটা ওয়াকিবহাল। কারণ, অধিকাংশ কর্মীরই সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেই। এখানেই শেষ নয়, হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, নজরদারিতে একটা ঢিলেঢালা ভাব রয়ে গিয়েছে এখনও। হাসপাতালের বিদ্যুতের লাইন নিয়মিত দেখভাল করার রেওয়াজও থমকে গিয়েছে ওই ঘটনার কিছু দিনের মধ্যেই।

হাসপাতালের বহু ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সংযোগের প্লাগ পয়েন্টে ঠিকমতো প্লাগ-কানেকশন হয় না বলেই জানাচ্ছেন, বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের বহু কর্মী। দিন কয়েক আগের ঘটনা, মেডিসিন বিভাগে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তন্ময় সরকার নামে এক যুবক। তাঁকে নেবুলাইজ করানো নিয়েই হইচই বেধে যায় হাসপাতালে। প্লাগ পয়েন্ট ঠিক মতো কাজ না করায় শেষতক জোড়াতালি দিয়েই তার নেবুলাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হাসপাতালের অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, প্লাগ পয়েন্টে শেষতক ষে ভাবে তার গুঁজে কাজ সামাল দেওয়া হয়েছিল, তা থেকে ফের শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

শুধু তাই নয়, এসি-র লাইন নিয়েও অভিযোগ রয়েছে ঢের। রয়েছে, ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসার ব্যবহারের আদবকায়দা জানা নিয়েও সংশয়। বিভিন্ন ওয়ার্ডের নার্সরাও জানাচ্ছেন, বার বার জানানো সত্ত্বেও বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের লাইন মেরামত হয়নি। এই অবস্থার মধ্যেই তাদের কাজ চালাতে হচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাথরুমেরও বিদ্যুতের লাইন ঠিক নেই বলে অভিযোগ। এক নার্সের কথায়, ‘‘বিভিন্ন প্লাগ পয়েন্টে এখনও অনর্গল স্পার্ক করে।’’ শুধু এই সমস্যা নয়, অভিযোগ, মাঝে মাঝেই কেবল ফল্ট ও শর্টসার্কিট হয় ডায়ালেসিস বিভাগেও। এসএনসিইউ বিভাগে এসি মেশিনে মাস ছয়েক আগে আগুন লেগেছিল। কোনওক্রমে তা নিভিয়ে ফেলা হলেও আশঙ্কা একটা রয়েই গিয়েছে। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ব্যবস্থা হয়েছে, তবে অনেকটাই মুখে। অগ্নি নির্বাপক যা ব্যবস্থা করা গিয়েছে তার ব্যবহার না জানলে লাভ কী!’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই ঘটনাগুলিকে ‘নিতান্তই ছোটখাটো ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজ সুপার দেবদাস সাহা ভরসা দিচ্ছেন, ‘‘হাসপাতালে আগুন নেভানোর সব ধরনের পরিকাঠামো রয়েছে। দমকলের গাড়ি যাতে ঢুকতে পারে তার জন্য হাসপাতালে আলাদা করিডর করা হয়েছে। এর পরেও যদি আগুন লাগে তা হবে নিছক ভাগ্যের ফের!’’

Murshidabad Medical College Fire Modern
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy