বছর বত্রিশের যুবকের হাতে বন্দুক। হিন্দি সিনেমার কায়দায় নানা রকম ভঙ্গিতে সেই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ নিজের ছবি তুলে ‘স্টেটাস’ দিয়েছিলেন ওয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে। স্টেটাসে লেখেন— ‘‘এই আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি হবে, কিনতে আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন।’’ সূত্র মারফত সেই খবর পৌঁছে যায় পুলিশকর্তাদের হাতে। শনিবার রাতে ডোমকলের মুরারিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজিবুল শেখকে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথমে আমাদের বিশ্বাসই হচ্ছিল না। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এ ভাবে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে বিক্রির ঘটনা বিরল। ঝানু অস্ত্র কারবারিরা এমন করে না।’’ ওই ছবি দেখে পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল নকল বা খেলনা বন্দুক হাতে মজা করতে যুবক এমন করেছেন। কিন্তু পরে দেখা যায় সেটি একনলা দেশি বন্দুক। সেটির কোনও লাইসেন্সও নেই। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ওই গ্রুপের উপরে নজর রেখে তদন্ত চালানো হচ্ছে। আপাতত গ্রুপটি ‘লক’ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, নতুন করে ওই গ্রুপে কেউ যুক্ত হতে পারবেন না। যে সদস্যরা এখন রয়েছেন, তাঁরাও কেউ ‘লিভ’ করতে পারবেন না। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, প্রাথমিক ভাবে ওই গ্রুপে কোনও দুষ্কৃতী বা অস্ত্রের কারবারি যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ডোমকলের এসডিপিও শুভম বাজাজ বলেন, ‘‘ওই যুবক যে আগ্নেয়াস্ত্রটি বিক্রির জন্য ওয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে বার্তা দিয়েছিল, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘এক যুবককে একটি বন্দুক-সহ ধরা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
ডোমকলে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার আগেও হয়েছে। তবে সমাজমাধ্যমে এ ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির চেষ্টার বিষয়টি আগে সামনে আসেনি। এক অভিভাবক জালালুদ্দিন মিঞা বলেন, ‘‘আমাদের সন্তানেরা ফেসবুক এবং ওয়ট্স্যাপে নানা গ্রুপে যুক্ত থাকে। এখন তো ভয় করছে, অজান্তে ওরা এমন কোনও বিপজ্জনক গ্রুপে যুক্ত হয়ে পড়বে না তো! পুলিশ সমাজমাধ্যমে নজরদারিআরও বাড়াক।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)