Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Arsenic Scare

আর্সেনিকের ভয় বাড়ছে

সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের দ্বারা প্রকাশিত এক রিপোর্টেও মানুষের ব্যবহারের নির্ধারিত সীমার বাইরে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক এবং ফ্লোরাইডের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৩
Share: Save:

মুর্শিদাবাদ সহ দেশের ২৫টি রাজ্যের ২৩০টি জেলার ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক এবং ২৭টি রাজ্যের ৪৬৯টি জেলায় ফ্লোরাইড মেলায় উদ্বেগ প্রকাশ করল দিল্লির জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সমীক্ষা থেকে জানা যায়, মুর্শিদাবাদের ২৬টির মধ্যে ১৯টি ব্লকই আর্সেনিক প্রবণ। রাজ্যের ৩৪১ ব্লকের মধ্যে ৭৯টি ব্লককে আর্সেনিকজনিত বলে চিহ্ণিত করে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। ২০০৭ সালে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক মুর্শিদাবাদের ভুগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক প্রবণতা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন। রিপোর্টে ভুগর্ভস্থ জল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে জেলার রিস্ক জোন হিসেবে ১০টি ব্লককে চিহ্ণিত করে তারা।

সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের দ্বারা প্রকাশিত এক রিপোর্টেও মানুষের ব্যবহারের নির্ধারিত সীমার বাইরে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক এবং ফ্লোরাইডের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।কয়েক বছর আগে এ রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর নিজেই জেলা জুড়ে ৪০,৮৯৩টি নলকুপের জল পরীক্ষা করে ৩০.৬৬ শতাংশ নলকুপে মাত্রাছাড়া আর্সেনিকের সন্ধান পেয়েছিল। আর্সেনিকের মাত্রা ছিল.০৫ থেকে.৩৭৭ মিলিগ্রাম।

যেমন বেলডাঙা ১ ব্লকের বেগুনবাড়ি গ্রামের নলকুপের জল পরীক্ষা করে আর্সেনিকের পরিমাণ মিলেছিল .২ মিলিগ্রাম। মহেশপুরের এক ব্যক্তির বাড়ির নলকূপে আর্সেনিক পাওয়া যায় .৪ মিলিগ্রাম। রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের ফ্রেজারনগরে নিখিল মণ্ডলের নলকূপে আর্সেনিকের পরিমাণ ছিল .২ মিলিগ্রাম। ওই গ্রামেরই গজেন প্রামাণিকের বাড়ির জলে আর্সেনিকের তীব্রতা .৩৬ মিলিগ্রাম। মানবদেহের আর্সেনিক সহন ক্ষমতার চেয়ে এই পরিমাণ ঢের বেশি। মানুষের পক্ষে আর্সেনিকের সহনশীলতা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত, প্রতি লিটার জলে.০১ মিলিগ্রাম। বুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যন্ডার্ড অনুযায়ী এই মাত্রা .০৫ মিলিগ্রাম।

সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার অথরিটির জারি করা বিজ্ঞপ্তিতেও ২৫টি রাজ্যে আর্সেনিকের উপস্থিতি এবং ২৭টি রাজ্যে ফ্লোরাইডের উপস্থিতির কথা স্বীকার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, উভয় রাসায়নিকই মানবদেহ ও স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক বিষাক্ত প্রভাব ফেলে এবং স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ ঘটায়।

ভারতের আর্সেনিক হটস্পট ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রথম ১৯৮০ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়ে। ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে মূলত ১০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত জলাশয়ে। যখন কোনও দূষক ভূগর্ভস্থ জলে থাকে, তখন এটি ভূগর্ভস্থ জলের প্রবাহের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা থাকে।

এত বেশি সংখ্যক রাজ্য এবং জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক এবং ফ্লোরাইডের উপস্থিতি মত সমস্যাটি অত্যন্ত গুরুতর এবং সমস্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি প্রতিরোধমূলক এবং সুরক্ষামূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন।

তাই অবিলম্বে এ ব্যাপারে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নোটিস পাঠিয়ে এক মাসের মধ্যে তার জবাব পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jangipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE