E-Paper

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সোনা পেল আয়েষা

গোটা কাটাখালি গ্রাম যেন তাই উৎসবের মেজাজে। এই প্রতিযোগিতার আয়োজন হয় কোচবিহারে। সেখানেই তিনটি দেশের প্রায় ৫০০ প্রতিযোগী যোগ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১২
ক্যারাটেতে সোনা জয়ী আয়েষা সিদ্দিকা।

ক্যারাটেতে সোনা জয়ী আয়েষা সিদ্দিকা। নিজস্ব চিত্র।

প্যারিসে যখন অলিম্পিক্স চলছে তখন নেপাল, ভুটান ও ভারতের প্রতিযোগীদের হারিয়ে ক্যারাটেতে সোনা জিতল ১৩ বছর বয়সী, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আয়েষা সিদ্দিকা। বাবা ইটভাটার শ্রমিক। শুধু সে-ই নয়, রঘুনাথগঞ্জের কাটাখালি হাইস্কুলের ৬ জন প্রতিযোগীর সকলেই জিতেছে পদক। কেউ রুপো, কেউ ব্রোঞ্জ। এক জন তো জিতেছে জোড়া ব্রোঞ্জ। এই প্রথম ত্রিদেশীয় কোনও প্রতিযোগিতায় লালগোলা লাগোয়া গ্রামের হাই স্কুলের ছাত্রীদের এত বড় সাফল্য মিলল। গোটা কাটাখালি গ্রাম যেন তাই উৎসবের মেজাজে। এই প্রতিযোগিতার আয়োজন হয় কোচবিহারে। সেখানেই তিনটি দেশের প্রায় ৫০০ প্রতিযোগী যোগ দেন।

কাটাখালি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসির আহমেদ বলেন, “স্কুলের পাশেই কস্তুরবা আবাসনে থাকে ছাত্রীরা। সকলেই অত্যন্ত দরিদ্র ঘর থেকে এসেছে। কেউ কেউ প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। স্কুলের মেয়েদের ছ’ছ’টি পদক জয়ের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা এলাকা।”

স্বর্ণপদক জয়ী আয়েষার বাবা জাহেরুল হক পেশায় স্থানীয় এক ইটভাটার শ্রমিক। বলছেন, “এক মাত্র মেয়ে আয়েষা। স্কুলের আবাসনেই থাকে। আমি জানতাম না যে পড়াশোনার ফাঁকে স্কুল থেকে সে ক্যারাটেরও প্রশিক্ষণ নেয়। মাস দুই আগে জানলাম। স্কুল থেকেই জানাল তাকে তিন দেশের প্রতিযোগিতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সোনা জিতে ফিরবে ভাবতে পারিনি। মেয়ে মুখ রেখেছে স্কুলের, পরিবারের। এতেই খুশি আমি।”

সপ্তম শ্রেণির আর এক ছাত্রী সাবনাজ সুলতানা দু’টি ব্রোঞ্জ জিতেছে। কুলগাছি গ্রামের বাসিন্দা সাবনাজের বাবা আদ্রুজামান পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা আমেনা বিবি। মেয়ের জোড়া সাফল্যে খুশি দু’জনেই। স্নেহা ইয়াসমিনের বাড়ি জঙ্গিপুরের চাঁদপুরে। বাবা রাজমিস্ত্রি, এই মুহূর্তে রয়েছেন হুগলিতে। মা টনি বিবি বলছেন, “মেয়ে স্কুলে ফিরে ফোন করেছিল। আমি অসুস্থ তাই যেতে পারিনি। ওর বাবাকেও জানিয়েছি সুখবর। অত্যন্ত খুশি তিনিও।”

সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রী সারমিন সুলতানা ও নাসরিনা খাতুন পেয়েছে ব্রোঞ্জ। দু’জনের বাবাই পেশায় রাজমিস্ত্রি। নাসরিনার মা সাগরি বিবি বলছেন, “এক মাত্র মেয়ে। ভীষণ সাহস। যখন শুনলাম সে ক্যারাটেতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ভাল লেগেছিল। মেয়েদের নিরাপত্তার জন্যও ক্যারাটে জরুরি।”

কৃষ্ণশাইল গ্রামে বাড়ি সারমিনের। মা সরিফা খাতুন বলছেন, “মেয়ের সাফল্যে কোন মা খুশি না হয়ে থাকতে পারে?”

পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া নাজমিন সুলতানা ব্রোঞ্জ জেতায় তার জালিবাগানের বাড়িতে সকলেই আনন্দে ভাসছে। স্কুল থেকে একই সঙ্গে সোনা সহ ৭টি পদক পাওয়ায় খুশি ক্যারাটে প্রশিক্ষক কাজি জান্নাতুন ফিরদৌস।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Karate Jangipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy