বহরমপুরে কৃপাময়ী কালী। নিজস্ব চিত্র।
বহরমপুরের কাশিমবাজার ভাটপাড়া কৃপাময়ী কালীবাড়ির এ বছর ১২৫তম বর্ষ। স্বাধীনতার আগে এই এলাকা জনমানবশূন্য ছিল। তখন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই মন্দিরে গোপন আস্তানা তৈরি করেছিলেন। শোনা যায় নেতাজিও এখানে আসতেন। তাই আজ অনেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সেই ইতিহাসকে ‘ছুঁয়ে দেখতে’ এই মন্দিরে আসেন।
মন্দিরের সেবাইত শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাশিমবাজারের রাজা মণিন্দ্র চন্দ্র নন্দীর রাজবাড়িতে পুরোহিত ছিলেন শুধাংশু শেখর চট্টোপাধ্যায়। তিনি এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠাতা করেন। মা কালী তখন মাটির বাড়িতে থাকতেন। রাজা মণিন্দ্র চন্দ্র উদ্যোগী হয়ে এই আজকের এই মন্দির তৈরি করেন।’’
ব্রিটিশ আমলে এই মন্দির এলাকায় কেউ থাকতেন না। তাই সহজেই এই মন্দির হয়ে ওঠে স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের গোপন ডেরা। আর মন্দিরে অন্য কেউ না এলেও পুরোহিতরা রোজ আসতেন। কিন্তু তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পূর্ণ সহযোগিতা করতেন এখানে লুকিয়ে থাকতে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও আসতেন বলে জানিয়েছেন শান্তনু চট্টোপাধ্যায়। এখানে থাকাকালীন ব্রিটিশরা তাঁর খোঁজ পাননি কখনও। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই মন্দির। শান্তনু চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের অন্যতম সদস্য শিপ্রা জানিয়েছেন, কথিত আছে বহরমপুর এলাকার জাগ্রত দেবী আনন্দময়ী, করুণাময়ী ও কৃপাময়ী ৩ বোন।
এলাকার বাসিন্দা কল্যাণী সরকার জানালেন, এক সময় এক দুপুরে ডাকাতরা মা-কে ভোগ দিয়ে মন্দিরে গা ঢাকা দিয়ে ছিল। ভোরে মন্দিরে ডাকাতি করে পালানোর সময় হঠাৎ কাঁসার বাসন পড়ে যায়। সেই সময় সেবাইত পরিবারের এক সদস্যও স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন মন্দিরে ডাকাতি হচ্ছে। তিনি গুলি করে এক ডাকাতকে মেরে ফেলেন। ডাকাতরা নাকি মূর্তির গা থেকে গয়না খোলার সময় মায়ের একটি পা ভেঙে ফেলে। পরে বারাণসী থেকে আবার কষ্ঠিপাথর নতুন মুর্তি নিয়ে আসা হয়। কৃপাময়ী কালী মাকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর পুরাতন মূর্তিটি আনন্দময়ী কালী মন্দিরে রাখা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy