বাইরে থেকে দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আর ভিতরে ঢুকলে রীতিমতো হতাশ হতে হয়! চকিতে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার বহরমপুর ডিপো বাস টার্মিনাসের অবস্থা এখন এমনটাই। যাত্রী পরিষেবা ও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে যেখানে অভিযোগের অন্ত নেই।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী ওই বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন করেন। প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গা জুড়ে রয়েছে বাস টার্মিনাস। পাশে স্থানীয় ও দূরপাল্লার বাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তৈরি হয় গ্যারেজ।
সেই গ্যারেজও মুখ থুবড়ে পড়ায় বাড়ছে বিকল বাসের সংখ্যাও। আইএনটিইউসি’র জেলা সভাপতি তথা বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংস্কারের অভাবে ওই বাস টার্মিনাসের বেহাল অবস্থা।’’
বাস টার্মিনাস জুড়ে নোংরা-আবর্জনা পড়ে রয়েছে। শেষ কবে ঝাঁটা পড়েছে মনে করতে পারেন না বহু কর্মী। শৌচালয়ের অবস্থাও তথৈবচ! অভাব পরিস্রুত পানীয় জলেরও। দূরপাল্লার যাত্রীরা বাস টার্মিনাসে নেমে দোকান থেকে পানীয় জলের বোতল কেনেন। আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের একটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু সংস্থার উদাসীনতায় সেটিও দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে রয়েছে।
বর্তমানে বহরমপুর ডিপো থেকে ১৭টি বাস জেলার বিভিন্ন রুটে চলে। তার মধ্যে বহরমপুর-পাঁচথুপি এবং বহরমপুর-দুর্গাপুর রুটের দুটি বাস চলাচল বন্ধ গিয়েছে। তারও আগে করিমপুর-শিকারপুর, রামপুরহাট, তারাপীঠ, তারকেশ্বর, নগর, খড়গ্রাম, হরিহরপাড়া, রামনগরঘাট, সালার, লালগোলা রুট থেকে বাস তুলে নেওয়ায় ব্যহত হচ্ছে যাত্রী পরিষেবা।
সিটু অনুমোদিত নর্থবেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের বহরমপুর ডিপো সম্পাদক আরাধনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও যাত্রী পরিষেবা বলতে কিছুই নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, নীল-সাদা রঙে মুড়ে দিয়ে বাইরে থেকে চাকচিক্য করা হলেও ভিতরটা ফাঁপা। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ডিপোর বাস আগে বহরমপুর বাস ডিপোতে ঢুকত। যাত্রী ওঠানামা করত। কিন্তু এখন বহিরাগত ডিপোর কোনও বাস ঢোকে না। ফলে যাত্রীরা জানতেও পারেন না যে বহরমপুর ডিপোতে অপেক্ষা করলে শেষ পর্যন্ত বাস পাবেন কি না!
উত্তরবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবলচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘সংস্কার করে অত্যাধুনিক বাস টার্মিনাসের চেহারা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বহরমপুর ডিপোতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও যাত্রী পরিষেবার দিকটিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন লোকাল রুট থেকে যে বাস তুলে নেওয়া হয় তা বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। ওই সমস্ত রুটে নতুন করে বাস চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’