দীর্ঘ ৮১ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতায় ‘ঘরের ছেলে’দের জয়-জয়কারে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় উৎসবের মেজাজে মাতল বহরমপুর। ভাগীরথীর বুকে ররিবার ৮১ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতায় বহরমপুর সুইমিং ক্লাবের রাকেশ বিশ্বাস প্রথম এবং দ্বিতীয় হয়েছেন চিরঞ্জীত বিশ্বাস। বহরমপুরের গাঁধী কলোনির বাসিন্দা ওই দু’জন ঘরের ছেলে জয়ী হওয়ায় ভাগীরথীর পাড়ে দাঁড়ানো কয়েক হাজার দর্শনার্থীদের মধ্যে তখন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ৮১ কিমি দীর্ঘ জলপথ অতিক্রম করতে রাকেশ সময় নিয়েছেন ১১ ঘন্টা ২৯ মিনিট ২৪ সেকেন্ড, চিরঞ্জিতের সময় লেগেছে ১১ ঘন্টা ৩৮ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড। ওই বিভাগেই তৃতীয় স্থান পেয়েছেন উলুবেড়িয়া অ্যামেচার অ্যাকুয়াটিক ক্লাবের তহরিনা নাসরিন।
৭১ তম ওই সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজক সংস্থা মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন। এদিন সকাল ৫টা ২৫ মিনিটে জঙ্গিপুর মহকুমার সুতি থানার আহিরণ ঘাট থেকে ৮১ কিমি ও দুপুর দেড়টা নাগাদ জিয়াগঞ্জ সদরঘাট থেকে বহরমপুর গোরাবাজার ঘাট পর্যন্ত পুরুষ ও মহিলা বিভাগের ১৯ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ৮১ কিলোমিটারে ১৮ জনের মধ্যে ৫ জন মহিলা প্রতিযোগী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন বহরমপুরের, মহারাষ্ট্রের ৪ জন, কর্ণাটকের এক জন, বাংলাদেশের দু’জন এবং বাকি ৫ জন রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাবের। তবে এ দিন জঙ্গিপুরের আহিরণ ঘাট থেকে বহরমপুর গোরাবাজার ঘাট পর্যন্ত ৮১ কিমি প্রতিযোগিতায় যোগ দেন ১৬ জন প্রতিযোগী। দু’জন প্রতিযোগী অনুপস্থিত ছিলেন।
তবে বহরমপুরের ‘ঘরের ছেলে’ ৬ জনের ভাল ফলের আশায় বুক বেঁধে ভাগীরথীর দু-পাড়ে ভিড় করেন বহরমপুর-সহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন বহরমপুর গোরাবাজার ঘাটে। এদিন বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিটে রাকেশ গোরাবাজারের নিজের চেনা ঘাটে বাঁধা পড়েন, তখন সোল্লাসে ফেটে পড়েন ভাগীরথীর দু-পাড়ের মানুষ। ১০ মিনিটের ব্যবধানে চিরঞ্জিত ‘ফিনিশিং পয়েন্ট’ ছুঁতেই দর্শকরা সোল্লাসে ফেটে পড়েন। রাকেশ ও চিরঞ্জিত কোমর জলে দাঁড়িয়ে দু’হাত তুলতেই পাড় বরাবর দাঁড়ানো হাজার-হাজার দর্শক হাততালি দিয়ে তাঁদের অভিবাদন জানান। ঘাটে পৌঁছানো মাত্র তাঁদের লাল কম্বল গায়ে জড়িয়ে গ্রীনরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে আগে থেকেই চিকিৎসক-নার্সদের নিয়ে গড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের টিম প্রস্তুত ছিলেন। চিরঞ্জিত ঘাটে পৌঁছনোর ২৪ মিনিট পরে তহরিনা কলেজে ঘাটে এসে পৌঁছান।