প্রতীকী ছবি।
ভোটার তালিকায় নাম তুলে ভারতের বৈধ নাগরিক হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশি দুষ্কৃতী— এমনই অভিযোগ উঠেছে তেহট্টে।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, আসলাম দফাদার নামে ওই দুষ্কৃতী বাংলাদেশ খুন করে কাঁটাতার পেরিয়ে এ পারে এসে বসবাস শুরু করেছে। পরে বাঁকা পথে ভোটার তালিকায় নামও তুলে ফেলেছে সে। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে প্রশাসন।
জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, আসলামের বাড়ি বাংলাদেশের মুজিবনগর গ্রামের মাঝপাড়া এলাকায়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রামেরই এক জনকে পিটিয়ে খুন করে সে ভারতে পালিয়ে আসে বলে অভিযোগ। প্রথমে সে তেহট্টের বেতাই এলাকায় বসবাস শুরু করে। পরে চলে আসে নওদাপাড়া এলাকায়। সেখানে তার দিদির বাড়িতে থাকতে শুরু করে। সেখানেই সে ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে।
এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু গোল বাধে আসলাম তার আর এক দিদির কাছে বাবার জমির ভাগ চেয়ে বসায়। দিদির পরিবার তার সম্পর্কে বাংলাদেশে খোঁজখবর শুরু করে। তাতেই তারা জানতে পারে, খুন করে ভারতে গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আসলামের নামে।
আসলামের জামাইবাবু জিন্নাত দফাদারের অভিযোগ, “আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বাংলাদেশে নিজেরই গ্রামে একজনকে খুন করে আসলাম এখানে পালিয়ে এসেছে। এমনকি বাংলাদেশের হাইকোর্ট তার বিরুদ্ধে বডি ওয়ারেন্টও বের করেছে। আমরা সেই সব কাগজপত্রও জোগাড় করে নিয়ে এসেছি। প্রশাসনকেও দিয়েছি।”
দিন কয়েক আগে খোদ কৃষ্ণনগর শহরে এক বাংলাদেশির নাম ভোটার তালিকায় ওঠার অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তা-ই নয়, ভুয়ো ভোটার কার্ড তৈরি করে সে অন্যের জমি বিক্রিও করে বলে অভিযোগ ওঠে। তেহট্টেও কার্যত একই রকম অভিযোগ উঠল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আসলামের বাবা মেঘা দফাদার তেহট্টের নওদাপাড়াতেই থাকতেন। পরে তিনি বাংলাদেশে চলে যান। এখানে থেকে যান তাঁর দুই মেয়ে হাসিনা ও সুহাগী। মেঘা দফাদারের ছ’কাঠা জমিতে বসবাস ও চাষ করে আসছেন তার বড় মেয়ে হাসিনা ও তাঁর স্বামী জিন্নাত দফাদার। একই গ্রামে বিয়ে হয়েছেল তাঁর ছোট মেয়ে সুহাগীর। বছর কয়েক আগে সুহাগী ও তাঁর স্বামী সদর দফাদার মারা গিয়েছেন। তাঁদের মেয়ে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাঁদের বাড়ি ফাঁকাই ছিল। পরিবার নিয়ে সেই বাড়িতে চলে আসে আসলাম। আর তার পরেই সে ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলে বলে অভিযোগ।
জিন্নাতের অভিযোগ, “যেই ওর ভোটার তালিকায় নাম উঠে গেল, তখনই আমাদের জমি দখল করতে উঠে পড়ে লাগল। এমনকি নানান ভাবে হুমকিও দিতে শুরু করে। এতগুলো বছর ধরে আমরা এই জমি রক্ষা করে আসছি। তা ছাড়া জমিটা আমার স্ত্রীকে দিয়েও গিয়েছিলেন আমার শ্বশুর। ওকে কেন দেব?”
জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন জিন্নাতেরা। গোয়েন্দাদের দাবি, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে আসলাম। কিন্তু বাংলাদেশে খুনের অভিযুক্ত কেউ কী ভাবে এ পারে এসে ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলল? তেহট্টের মহকুমাশাসক সুধীর কোস্তম বলেন, “গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কারও গাফিলতি ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy