Advertisement
E-Paper

নেই পাঁচিল, ওঁত পেতে দুর্ঘটনা

বিভিন্ন জেলা জুড়ে এমনই পাঁচিলহীন স্কুলে গত কয়েক বছরে দুর্ঘটনার নথি দেখে চমকে উঠছেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা। তার জেরেই রাজ্যের প্রতিটি স্কুলেই পাঁচিল দিয়ে ঘেরার নির্দেশ দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩০
রাস্তার পাশে স্কুল হলেও নেই পাঁচিল। বৃহস্পতিবার ডোমকলে। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার পাশে স্কুল হলেও নেই পাঁচিল। বৃহস্পতিবার ডোমকলে। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুল আছে, তবে তার চেনা কোনও চৌহদ্দি নেই। অবাধ স্কুল-দুনিয়ার বাইরে কোথাও হু হু করে ছুটছে জাতীয় সড়ক। কোথাও বা আজংলা ঝোপ, কোথাও ডোবা-পুকুর-নদী হাতছানি দিচ্ছে দুর্ঘটনার। গণ্ডিহীন স্কুলে ছেলে-মেয়ে পাঠিয়ে তাই আতঙ্কে ভুগছেন গাঁ গঞ্জের অভিভাবকেরা।

বিভিন্ন জেলা জুড়ে এমনই পাঁচিলহীন স্কুলে গত কয়েক বছরে দুর্ঘটনার নথি দেখে চমকে উঠছেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা। তার জেরেই রাজ্যের প্রতিটি স্কুলেই পাঁচিল দিয়ে ঘেরার নির্দেশ দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

নদিয়া-মুর্শিদাবাদও তার ব্যতিক্রম নয়। সমশেরগঞ্জের মহব্বতপুরের কথা আজও কেউ ভোলেননি। দু’বছর আগে ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে বন্যার জল জমে ডোবার আকার নিয়েছিল। সেই জলেই ডুবে মৃত্যু হয়েছিল এক শিশুর। নদীর চাপড়ার একটি স্কুলেও রয়েছে একই অভিজ্ঞতা। নবগ্রামের একটি স্কুলে ভাঙা পাঁচিল টপকে পড়শি পুকুরে সাঁতার কাটতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছিল এক ছাত্র। তাকে উদ্ধার করার পরে, স্কুলে দেওয়াল তোলা না গেলেও পুকুরটি ঘিরে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ায় প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে প্রায় ৩৩০০ স্কুল আছে। তার মধ্যে ১২৫০টি স্কুলে পাঁচিল আছে। বাকি স্কুলগুলি অবাধ। নদিয়ার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচিল নেই। সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষা দফতর থেকে স্কুলগুলির পরিকাঠামো খামতি কী কী আছে সে বিষয়ে সবিস্তার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্টে পাঁচিলই গুরুত্ব পেয়েছে। জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায়ের দাবি, “মাস তিনেক আগেই পাঁচিল তৈরি করার জন্য পরিকল্পা করে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের পাঠিয়েছি।”

মুর্শিদাবাদেও প্রাথমিক ও হাই স্কুলের সংখ্যা প্রায় চার হাজার। অধিকাংশে পাঁচিল নেই। এ জেলাতেও অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচিল নেই। এই জেলায় ৩১৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০২৭ স্কুলে পাঁচিল নেই বলে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষাদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) নীহারকান্তি ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের জেলায় অধিকাংশ স্কুলে পাঁচিল নেই। বিষয়টি আমরা শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।”

ডোমকলে গঙ্গাদাসপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে বহরমপুর-করিমপুর রাজ্য সরকার। পাঁচিল না থাকায় ওই ব্যস্ত সড়কের দিকে সব সময় নজর রাখতে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমিতাভ সরকার এই প্রসঙ্গে বলছেন, “ব্যস্ত রাস্তার পাশে স্কুল। পাঁচিল না থাকায় সব সময় নজর রাখতে হয়। এই বুঝি অঘটন ঘটল!’’ কৃষ্ণনগরে বেড়াবেড়িয়া ভূতপাড়া প্রাথমিক স্কুলের সামনে দিয়ে চলে গিয়েছে কৃষ্ণনগর-বগুলা রাজ্য সড়ক। স্কুলে প্রায় ২৪০ জন পড়ুয়া আছে। পাঁচিল না থাকায় আতঙ্ক ও উদ্বেগে কাটে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। প্রধান শিক্ষক দেবাশিস অধিকারী বলছেন, “পাঁচিলের জন্য একাধিকবার দরখাস্ত দিয়েছে। টাকা বরাদ্দ হয়নি।”

School Infrastructure
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy