Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

অমিত শাহকে পাল্টা জবাব পার্থ-ববিদের

দিন কয়েক আগেই বেথুয়াডহরিতে জনসভা করেছিলেন  বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেই জায়গাতেই পাল্টা সভা করল তৃণমূল। 

তৃণমূলের সভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঞ্চে বসে ফিরহাদ হাকিম। শনিবার বেথুয়াডহরিতে। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের সভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঞ্চে বসে ফিরহাদ হাকিম। শনিবার বেথুয়াডহরিতে। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার
নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৯
Share: Save:

দিন কয়েক আগেই বেথুয়াডহরিতে জনসভা করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেই জায়গাতেই পাল্টা সভা করল তৃণমূল।

শনিবার কলকাতার জনসভায় যখন তৃণমূল নেত্রীর প্রতি আক্রমণ শানাচ্ছেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ, বেথুয়াডহরিতে দাঁড়িয়ে তার প্রত্যুত্তর দিলেন দলের শীর্ষনেতা ফিরহাদ (ববি) হাকিম, পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরা।

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে অসম উত্তাল হওয়া ইস্তক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ লাগোয়া নদিয়ার রাজনীতিতেও। দ্বিজাতিতত্ত্ব আউড়ে ‘অনুপ্রবেশকারী’ চিহ্নিত করে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছে বিজেপি। পার্থর দাবি, ‘‘নদিয়াতেই সংখ্যাটা ২০ লক্ষ। আজ যে সাংঘাতিক তাস বিজেপি খেলছে তাতে শুধু বাংলা নয়, যারা ভারতীয় নাগরিক তাদের জন্য প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আধার আছে, ভোটার কার্ড আছে। তবুও নাম বাদ দিচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু নয়, সাড়ে বারো লক্ষ হিন্দুর নামও বাদ গিয়েছে।’’

গত পঞ্চায়েত ভোটে নাকাশিপাড়া ব্লকে কার্যত পিছু হটেছে তৃণমূল। গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৭৮টি আসনের মধ্যে তারা জিতেছে ১২৪টি। আর বিজেপি ১০৫টি। একটি জেলা পরিষদের আসনও পেয়েছে বিজেপি। তাই জমি না ছেড়ে বেথুয়াডহরি জেসিএম স্কুল মাঠে পাল্টা জনসভার এই আয়োজন। পার্থ-ববির সঙ্গে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতাবালা ঠাকুরও।

ববি বলেন, ‘‘ওরা (বিজেপি) বলছে, মমতা শুধু মুসলিম তোষণ করে। জঙ্গলমহলে ৩৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। স্কুল-কলেজ তৈরি হচ্ছে। আদিবাসীদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির চেষ্টা হচ্ছে। তফসিলি জাতি ও জনজাতির উন্নতি করছে। কই, সে সব নিয়ে তো কিছু বলে না!’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিবেকানন্দ-রামকৃষ্ণের কথা থেকে ধর্ম শিক্ষব না ভাগবতের কাছ থেকে? রামকৃষ্ণ বলেছিলেন, যত মত তত পথ। এর চেয়ে বড় কিছু আছে?’’

এ দিন দুপুর ২টোয় প্রচণ্ড রোদের মধ্যেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল সভার মাঠে। জেলার নেতারাও আসতে শুরু করেছিলেন। মুসলিমদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। একেবারে শেষে বলতে ওঠেন নদিয়ার দায়িত্বে থাকা পার্থ। তখন অনেকেই উঠে যাওয়ার জন্য উশখুশ করছেন। কারও নাম না করে পার্থ বলেন, ‘‘আমাদের দল যাকে দায়িত্ব দিয়েছিল নদিয়ায় তৃণমূলের ফুল ফুটিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, আজ সেই লোকটাই সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজি করে মানুষকে আমাদের দল সম্পর্কে ভুল বার্তা দিচ্ছে।’’ তবে তাঁর আশ্বাস, যাঁরা ভুল করে অন্য দলে গিয়ে জয়ী হয়েছেন, তাঁদের সকলকে তৃণমূলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এমন শ’দুয়েক জনপ্রতিনিধি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

এ দিনই কলকাতায় অমিত শাহ দাবি করেন, অনুপ্রবেশকারীরা আগে সিপিএমের ভোটব্যাঙ্ক ছিল, এখন তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক। পার্থ পাল্টা বলেন, ‘‘আমাদের ভোটব্যাঙ্ক সারা বাংলা। ওদের কোনও ব্যাঙ্ক নেই। সব নিয়ে গিয়েছে নীরব মোদীরা।’’ অমিত শাহের কটাক্ষ: ‘‘রাজ্যে অন্য কারখানা নেই, খালি বোমা তৈরির কারখানা।’’ পার্থ পাল্টা বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বাংলা এক নম্বরে। সেটা বলছে বিজেপি সরকারই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE