এনুমারেশন ফর্ম বিলি করতে গিয়ে অদ্ভুত পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন বিএলও। এক স্বামীর দুই স্ত্রী। দু’জনেরই দাবি, স্বামীর এনুমারেশন ফর্মে স্ত্রীয়ের নামের জায়গায় তাঁদের দু’জনেরই নাম রাখতে হবে। কিন্তু ফর্মে তো একটি নাম রাখার জায়গা। বিপাকে বিএলও। জবাব নেই বিডিওর কাছেও। অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের ডোমকলের সুকুর মণ্ডলের বাড়িতে দুই সতীনের লড়াই তুঙ্গে।
সম্প্রতি এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে ডোমকলের রায়পুরের চোয়াপাড়ায় গিয়েছিলেন ব্লক স্তরের আধিকারিক (বিএলও) নাজমুন্নেসা খাতুন। বিভিন্ন বাড়িতে ফর্ম দিয়ে তিনি হাজির হয়েছিলেন সুকুরের বাড়িতে। কাজের সূত্রে সুকুর এখন কেরলে। বাড়িতে তাঁর দুই স্ত্রী মমতা বিবি এবং মর্জিনা বিবি। তা ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যেরা রয়েছেন। ফর্ম বিলি পর্যন্ত ঠিকই ছিল। বিএলও বিপাকে পড়েছেন ফর্ম নেওয়ার সময়।
কারণ, সুকুরের দুই স্ত্রীয়ের দাবি, স্বামীর এনুমারেশন ফর্মে স্ত্রীয়ের নামের জায়গায় তাঁদের দু’জনেরই নাম লিখতে দিতে হবে। সে জন্য ফর্মে কেন দুটো জায়গা নেই, বিএলওকে সেই প্রশ্ন করেন দুই সতীন। জবাব ছিল না বিএলওর কাছে। কিন্তু সুকুরের দুই আইনত স্ত্রী সমানাধিকার চাইছেন, এটাও তাঁর কাছে অযৌক্তিক লাগেনি। পরে শলাপরামর্শ করে জানাবেন বলে বিএলও ফিরে গিয়েছেন।
কিন্তু সুকুরের বাড়িতে এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সাংসারিক অশান্তি। ভিন্রাজ্য থেকে সুকুর ফোনে জানিয়েছেন, দুই স্ত্রীয়ের যে কোনও এক জনের নাম এনুমারেশন ফর্মে লেখা হলে অপর জন ক্ষুব্ধ হবেন। সেটা তিনি কোনও ভাবেই চান না। হয় দু’জনেরই নাম দিতে হবে, না হলে ফর্মে ‘ঘর’ বাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন:
এখন সমস্যা সামলাতে গিয়ে বিড়ম্বনায় বিএলও নাজমুন্নেসা। তিনি মৌখিক ভাবে বুঝিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছেন। তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি। দুই স্ত্রীয়ের নাম না লিখতে দেওয়া হলে ফর্ম পূরণ করতে নারাজ সুকুর। ইতিমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছেন বিএলও। কিন্তু এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশ নেই। তাই তাঁরাও সদুত্তর দিতে পারছেন না। ডোমকলের বিডিও পার্থসারথি মণ্ডল বলেন, ‘‘যে প্রশ্ন উঠেছে তা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু সত্যি বলতে কী, এর সঠিক জবাব নেই আমার কাছে। কমিশন কী জানায়, তার অপেক্ষায় থাকব আমরা।’’