E-Paper

কচুরিপানায় থমকে জলঙ্গি পারের নৌকা

তেহট্টের প্রধান নদী জলঙ্গি। নদীর এক পারে তেহট্ট ১ ব্লক, অন্য পারে তেহট্ট ২ ব্লক। তেহট্ট থেকে নদী পেরিয়ে তবেই বাসে বা অটোয় বার্নিয়া, হাঁসপুকুরিয়া, দেবগ্রাম যেতে হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৫
জলঙ্গি জুড়ে কচুরিপানা। আটকে রয়েছে যাত্রী পারাপারের নৌকা। বৃহস্পতিবার তেহট্টে।

জলঙ্গি জুড়ে কচুরিপানা। আটকে রয়েছে যাত্রী পারাপারের নৌকা। বৃহস্পতিবার তেহট্টে। ছবি: সাগর হালদার।

গোটা একটা দিন কচুরিপানায় বন্দি হয়ে রইল জলঙ্গি। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। জলঙ্গির স্রোত কচুরিপানা ভাসিয়ে নিয়ে না যেতে পারলে আজ, শুক্রবারও নৌকা চলাচল সম্ভব হবে কি না, তা অনিশ্চিত।

বুধবার রাত ১১টা থেকে বৃহস্পতিবার পুরো দিন কচুরিপানায় আটকে রইল যাত্রী পারাপারের নৌকা। বন্ধ রইল চলাচল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর বহু জনকেই একাধিক কিলোমিটার উজিয়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে পৌঁছতে হয়েছে গন্তব্যে। ভোগান্তিতে পড়েছেন তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকের বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

তেহট্টের প্রধান নদী জলঙ্গি। নদীর এক পারে তেহট্ট ১ ব্লক, অন্য পারে তেহট্ট ২ ব্লক। তেহট্ট থেকে নদী পেরিয়ে তবেই বাসে বা অটোয় বার্নিয়া, হাঁসপুকুরিয়া, দেবগ্রাম যেতে হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখান দিয়ে পার হন। নদী পারাপারের জন্য বর্ষা বাদে বাকি সময় থাকে বাঁশের সাঁকো। জল বাড়লে সাঁকো তুলে নেওয়া হয়, শুরু হয় নৌকা চলাচল।

খেয়াঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, দু’দিন ধরে জল বাড়তে থাকায় বুধবার সকালে বাঁশের সাঁকো বরাবর জলের পাশাপাশি কচুরিপানাও উঠে যায়। ফলে সে দিনই সাঁকোর ফরাস ধীরে ধীরে তোলার কাজ শুরু হয়। আর নদী পেরোনোর জন্য নৌকার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই সাঁকো তোলার পরেই হয়েছে বিপত্তি। সাঁকোর এক দিকে আঅটকে থাকা কচুরিপানা গোটা নদীতে ছড়িয়ে পড়ে নৌকা চলাচলের পথ রুদ্ধ করেছে। খেয়া কর্তৃপক্ষ জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার পর কচুরিপানা জমে যায়। এর পর থেকে আর নৌকা চালানো সম্ভব হয়নি।

জলঙ্গির উপর বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত সাঁকো আছে, তার মধ্যে তেহট্টের এই খেয়াঘাট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখান দিয়ে পারাপার বন্ধ থাকায় বেশি সমস্যায় পড়েছেন তেহট্ট ২ ব্লকের চকবিহারী, হাঁসপুকুরিয়া, বার্নিয়া, নতিপোতা, ঝিনুকঘাটার মানুষজন। সেখানকার বহু পড়ুয়া তেহট্ট হাইস্কুল, শ্রীদামচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের পড়াশোনা করে। তা ছাড়া তেহট্ট ১ ব্লকেই রয়েছে নানা বাজার, আদালত, মহকুমাশাসকের দফতর। অনেকেই কাজ থাকলেও আসতে পারেনি। তেহট্ট ও নাটনা পঞ্চায়েতের মানুষ নদী পেরিয়ে ওপারে গিয়ে বাস ধরে জাতীয় সড়কে পৌঁছন। এ দিন সেটাও সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা তিলক বিশ্বাস, মধুমিতা বিশ্বাসেরা বলেন, “কর্মসূত্রে তেহট্টে যাতায়াত। প্রতিদিন সকালে নদী পেরিয়ে দেবগ্রাম থেকে আসি। কিন্তু এ দিন ঘাটে এসে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হয়েছে।” শমীক ঘোষ নামে আর এক জন বলেন, “তেহট্ট ঘাট থেকে বাস ধরে আমি দেবগ্রাম যাই, আজ আর কাজে যাওয়া হয়নি।”

তেহট্ট খেয়াঘাটের ইজারাদারদের অন্যতম বিশ্বজিৎ মাঝি বলেন, “রাত সাড়ে ১০টার পর কচুরিপানার জন্য নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একটা বোর্ডে লিখে যাত্রীদের পরিষেবা বন্ধের কথা জানানো হয়েছে। কচুরিপানা না সরলে নৌকা চলাচল শুরু করা কঠিন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalangi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy