Advertisement
E-Paper

খুন সন্দেহে কবর থেকে তোলা হল দেহ

শমসেরগঞ্জ থানার তিনপাকুড়িয়ায় রেহেনার বাপেরবাড়ি। তিন বোনের মধ্যে বড় রেহেনার বিয়ে হয়েছিল প্রায় ১৫ বছর আগে, মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার পারদেওনাপুর গ্রামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২২
কবর থেকে দেহ তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

কবর থেকে দেহ তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

তাদের মাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরেছিল বাবা-ই। আদালতে দাঁড়িয়ে দুই মেয়ে এমনই জবানবন্দি দিয়েছিল। তারপরই শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশকে রেহেনা খাতুনের (৩২) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এবং এফআইআর রুজুর নির্দেশ দিয়েছিল জঙ্গিপুর আদালত। পুলিশ রেহেনাকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী বরজাহান আলির বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে। ঘটনার তিন মাস পর বুধবার রেহেনার দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তে পাঠানো হল। মৃতের পরিবারের দাবি, পরপর ছ’টি কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার জন্যই এই খুন।

শমসেরগঞ্জ থানার তিনপাকুড়িয়ায় রেহেনার বাপেরবাড়ি। তিন বোনের মধ্যে বড় রেহেনার বিয়ে হয়েছিল প্রায় ১৫ বছর আগে, মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার পারদেওনাপুর গ্রামে। সেখান থেকে বছর দশেক আগে তিনপাকুড়িয়ায় শ্বশুরবাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেছিল রেহেনার স্বামী বরজাহান। পরে ওই গ্রামেই বাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করে রেহেনার পরিবার।

মৃতার দাদা ডালিম শেখের অভিযোগ, পরপর ছ’টি কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় তাঁর বোনকে নির্যাতন করত বরজাহান। সে মেয়েদেরও মারধর করত বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে গত ২৮ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় রেহেনার। ডালিম জানান, স্বাভাবিক মৃত্যু ধরে নিয়ে বোনের দেহ গ্রামেই কবর দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্ত্রীর মৃত্যুর তিনদিন পর ফের বিয়ে করে বরজাহান। এরপরই রেহেনার ছয় মেয়ে মামার বাড়িতে চলে আসে।

রেহেনা এবং বরজাহানের বড় মেয়ে শামিমা খাতুন দশম শ্রেণির পড়ুয়া। ওয়াসিমা পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। ডালিমকে তারা জানায়, কীভাবে তাদের মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শামিমার দাবি,, “বাড়িতে পাশাপাশি দু’টি ঘরের একটিতে আমরা ছয় বোন ঘুমোতাম। পাশের ঘর শুত বাবা-মা। ওইদিন রাতে হঠাৎই মায়ের চিৎকার শুনতে পাই। ছুটে গিয়ে দেখি, মা’র মুখের ওপর বালিশ চেপে ধরে রেখেছে বাবা। মা ছটফট করছে। আমরা চেঁচামেচি করলে বাবা আমাদের শাসিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেয়। ঘটনার কথা কাউকে বললে আমাদের মেরে ফেলারও হুমকি দেয়।’’ পরদিন সকালে বরজাহান জানায়, ঘুমন্ত অবস্থায় স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে তার স্ত্রীর। সকলে সে কথা বিশ্বাসও করে।” তারপরই দেহ কবর দিয়ে দেওয়া হয়। ওয়াসিমা জানিয়েছে, মাকে যে খুন করেছে বাবা, ভয়ে সে কথা প্রথমে তারা কাউকে জানাতে পারেনি।

ডালিম এদিন বলেন, “ভাগ্নিদের কাছে ঘটনার কথা শুনে আমরা বরজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলাম। ততক্ষণে নতুন স্ত্রীকে নিয়ে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তারপরই আমি শমসেরগঞ্জ থানায় গোটা ঘটনা জানাই। পুলিশের পরামর্শে আদালতের দ্বারস্থ হই। বোনের দুই মেয়ের জবানবন্দি নিয়ে আদালত কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে এফআইআর রুজুরও নির্দেশ দেওয়া পুলিশকে। গত ১৪ মার্চ পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে।”

তবে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বরজাহানের খোঁজ চলছে।

Crime Murder Postmortem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy