Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Krishnanagar

যাত্রী তোলায় মার, বন্ধ বাস

করোনায় লক ডাউনের পর থেকে এমনিতেই যাত্রী কম হওয়ায় বাসমালিকরা ক্ষতির মুখে। যে কারণে বাস মালিক ও কর্মীরা ক্ষুব্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০২:২০
Share: Save:

কলকাতা থেকে ফেরার পথে বুধবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে কয়েক জন যাত্রী করিমপুরের বাসে উঠেছিলেন। তা দেখে কৃষ্ণনগরের কয়েক জন বাস মালিক ওই বাসের কর্মীদের মারধর ও বাস ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ উঠল। ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন করিমপুরের দুরপাল্লা বাস শ্রমিক ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রায় আড়াইশো জন বাস কর্মী। তাঁরা এ দিন দুরপাল্লা রুটের সকল বাস চলাচল বন্ধ রেখে কাজ থেকে বিরত থেকেছেন।

বাস কর্মীরা জানান, করিমপুর এবং মুর্শিদাবাদের ডোমকল থেকে কলকাতা, দিঘা, বর্ধমান কিংবা বনগাঁ রুটে প্রতিদিন কুড়িটি বাস যাত্রী পরিষেবা দেয়। এ ছাড়াও প্রায় দেড়শো বাস করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত চলাচল করে। ওই রুটের প্রথম বাস সকাল সাড়ে ৫টায় করিমপুর থেকে ছাড়ে এবং রাতে সাড়ে ৭টার পরে কৃষ্ণনগর থেকে ফেরার বাস থাকে না। আবার যারা গোপালপুর ঘাট, জলঙ্গি কিংবা ডোমকলের যাত্রী তাঁরা এই বাসে যেতে চান। অথচ কৃষ্ণনগরের মালিকদের একাংশ যাত্রীদের এই বাসে উঠতে দিতে চান না। কিন্তু দুরপাল্লার বাস ভোর তিনটে থেকে সকাল পর্যন্ত ও সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি করিমপুর থেকে যাত্রী পরিবহন করে। বাসগুলোতে সাধাণ যাত্রীর পাশাপাশি বহু সংখ্যক রোগী ও ব্যবসায়ী দুরপাল্লার বাসে যাতায়াত করেন। কারণ, তারা একই বাসে চেপে এবং কম সময়ে সরাসরি গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। বর্তমানে কলকাতা বা দিঘা থেকে করিমপুর বা ডোমকলে ফেরার সময় খারাপ রাস্তা ও যানজটের কারণে কখনও কখনও কোনও বাস দুয়েক ঘণ্টা দেরিতে ঢোকে। অনেক যাত্রী কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর বা সরাসরি ডোমকলে ফেরার সময় এই বাসের জন্য অপেক্ষা করেন। বুধবার তেমনই কলকাতা-ডোমকল রুটের দু’টি বাস কৃষ্ণনগর আসে। সে সময় কয়েক জন যাত্রী ওই বাসে উঠে পড়েন। অভিযোগ, তা দেখে কৃষ্ণনগরের কয়েকজন বাস মালিক ওই দু’টি বাসের কর্মীদের মারধর করেন। বাস ভাঙচুরও করা হয়। মাঝে মাঝেই এমন ঘটনা ঘটে।

সোসাইটির সম্পাদক সন্তু স্বর্ণকার জানান, ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এদিন থেকে কেউ কাজ করবে না বলে বাস চলেনি। তবে রোগী বা বিমানের যাত্রী যারা জরুরি কাজের জন্য অগ্রিম বাসের টিকিট কেটেছেন তাঁদের অসুবিধার কথা ভেবে রাতের বাস চলছে। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন স্থানীয় বিধায়কের কাছে সমস্ত বিষয়টি জানানো হয়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও সুরাহা না হলে শনিবার থেকে কর্মবিরতি চলবে এবং সে ক্ষেত্রে দুরপাল্লার সমস্ত বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।’’

জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক পিন্টু সিংহ রায় জানান, দীর্ঘ দিন থেকে দুরপাল্লার বাসগুলোর কোনও সঠিক সময় নেই এবং করিমপুরে যাওয়ার সময় ট্রেনের যাত্রীদের তোলে। ফলে বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে করিমপুর কৃষ্ণনগর রুটের বাসে যাত্রী হচ্ছে না। করোনায় লক ডাউনের পর থেকে এমনিতেই যাত্রী কম হওয়ায় বাসমালিকরা ক্ষতির মুখে। যে কারণে বাস মালিক ও কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘‘বারবার বলেও কাজ না হওয়ায় সে দিন কর্মীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হলেও মালিকদের কেউ ছিলেন না। অনেক আগে থেকে এই সমস্যার সমাধান করার জন্য প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। এ ভাবে চললে রুটের বাস বন্ধ করতে হবে।’’ নিজস্ব চিত্র

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar Brawl Bus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE