কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকজনেরা। — নিজস্ব চিত্র
বলেছিলেন বাড়ি ফিরে বোনের বিয়ের ব্যবস্থা করবেন। ফিরলেন। তবে, কফিনবন্দি হয়ে।
বুধবার বাড়িতে ফিরল কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ বাবন সাহা (২৪)। পরিবারের লোকজন জানান, বছর আড়াই আগে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয় ওই যুবক। মালদহ, রাজস্থান ঘুরে বর্তমানে কাশ্মীরের পাক সীমান্তে বিএসএফের কুপওয়ারা ক্যাম্পের ভরিবালা আউটপোস্টে কর্মরত ছিলেন তিনি। সোমবার ভোরে আচমকা জঙ্গিরা গুলি চালালে ওই আউটপোস্টের মোতায়েন পাঁচজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে তিনজন বিএসএফ জওয়ান ও দু’জন ভারতীয় সেনাকর্মী। বুধবার দুপুরে ওই জওয়ানের দেহ এসে পৌঁছয় বড়ঞার নবদুর্গা গ্রামের বাড়িতে। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভাবের সংসারে বাবার ভার লাঘব করতে সেনা বাহিনীতে যোগ দেয় সে। মাস খানেক আগে তিনি বাড়ি থেকে কাজে যোগ দিতে যান। ফোন করে নিয়মিত বাড়ির খোঁজখবর নিতেন। নিজে ছিলেন খাদ্যরসিক। তাই ফোন করে প্রথমেই মা চায়নাদেবীর কাছে জানতে চাইতেন বাড়িতে কী রান্না হয়েছে। বিদেশে ছেলে আছে তাই ছেলের পচ্ছন্দের খাবার আলুপোস্ত রান্না হলেও সে কথা জানাতেন না। মা চায়নাদেবী বলেন, “বিয়ের কথা বললে বলত আগে বোনের বিয়ে হোক। পুজোর সময় তিন মাসের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসার কথা ছিল। সে সময় ওর বিয়ে দেব ভেবেছিলাম। হল না।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিবেশীদের কাউকে কাউকে কথা দিয়েছিলেন, এ বার পুজোতে তাঁদের জন্য কাশ্মীরি শাল আনবেন। বোন কেয়া সাহা বলেন, “ছোট থেকেই দুই ভাই-বোনে খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি। দাদা সংসারে হালটা ধরেছিল। এখন সব শেষ হয়ে গেল।’’ এ দিকে দিনভর চুপ করে বসেছিলেন বাবা ভরেশ সাহার। বাড়ির বাইরে মন্দিরের সামনে ছেলের ছবির পাশে চুপ করে বসে ছিলেন। প্রতিবেশিদের সাত্ত্বনা দিতে গেলে তিনি ছিলেন নিরুত্তর।
বাবনের দেহ নিয়ে এসেছিলেন বিএসএফের অ্যাসিস্টেন্ট সাব ইন্সপেক্টর ভৃপুরাম মণ্ডল। তিনি বলেন, “জঙ্গিরা সোমবার ভোরে আচমকা ক্যাম্পে আক্রমণ করে। গুলিতে পাঁচজন জওয়ান মারা যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy