Advertisement
E-Paper

আদালত অচল, সঙ্কটে ক্যানসার আক্রান্ত বন্দি

গত ২৫ এপ্রিল থেকে রাজ্যজুড়ে আদালতগুলিতে কর্মবিরতি চলছে। তা শুরু হওয়ার আগেই গত ৫ মার্চ থেকে জঙ্গিপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের এক বিচারকের এজলাস বয়কট শুরু করেন আইনজীবীরা।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০১:৩২
গরিব শেখ। নিজস্ব চিত্র

গরিব শেখ। নিজস্ব চিত্র

রাজ্য জুড়ে আইনজীবীদের এজলাস বয়কট অব্যাহত। আর তারই খেসারত দিচ্ছেন ক্যানসার আক্রান্ত এক বৃদ্ধ। আদালতে অচলাবস্থার জেরে গত দু’মাস ধরে তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি আটকে রয়েছে। ফলে জেল হেফাজতে কার্যত বিনা চিকিৎসায় এই মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সুতির কালীনগর গ্রামের বাসিন্দা, ৮০ বছর বয়সি গরিব শেখ। উপায়ান্তর না দেখে জঙ্গিপুর উপসংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ বুধবার বিকেলে তাঁকে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন।

গত ২৫ এপ্রিল থেকে রাজ্যজুড়ে আদালতগুলিতে কর্মবিরতি চলছে। তা শুরু হওয়ার আগেই গত ৫ মার্চ থেকে জঙ্গিপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের এক বিচারকের এজলাস বয়কট শুরু করেন আইনজীবীরা। আর সেই আদালতেই পাঁচ বছরের পুরনো একটি মামলায় অভিযুক্ত গরিব। আহিরণ ফাঁড়ির পুলিশ গত ১৮ মার্চ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। ওই বৃদ্ধের ছেলে কালাচাঁদ শেখের বিয়ে হয়েছিল রঘুনাথগঞ্জের মঙ্গলজনের বাসিন্দা চাঁদনি বিবির সঙ্গে। পুলিশ সূত্রের খবর, দাম্পত্য কলহের জেরে ২০১৪ সালের মে মাসে শ্বশুরবাড়ি থেকে চাঁদনির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও জায়ের বিরুদ্ধে সুতি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন চাঁদনির মা তাসেলা বিবি। ২০১৪ সালের সেই মামলায় পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করেছি লপুলিশ। তবে মাসদুয়েকের মধ্যে তাঁরা জামিন পান। কিন্তু মৃতার শ্বশুর, গলার ক্যানসারে আক্রান্ত গরিবের ওই অবস্থা দেখে সেই সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি।

গরিবের ছেলে ইদু শেখ বুধবার বলেন, ‘‘বাবার চিকিৎসা চলছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। থানার নতুন আইসি’কে বারবার অনুরোধ করেছিলাম, এখন গ্রেফতার করলে বাবা জামিন পাবেন না। কিন্তু ওই পুলিশ অফিসার কোনও কথাই শুনলেন না।’’ পুলিশ গরিবকে গ্রেফতার করে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। কিন্তু ওই হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ইদুর অভিযোগ, ফলে দু’মাস ধরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন গরিব।’’

জঙ্গিপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের সরকারি আইনজীবী সমীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিচারক শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলি না করা পর্যন্ত কোনও আইনজীবী ওঁর এজলাসে কাজ করবেন না। তাই ওই অসুস্থ বৃদ্ধের হয়ে কিছুই করার নেই আমাদের। তবে ওই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত-সহ চার জনই জামিন পেয়েছেন। তাই ওই বৃদ্ধেরও জামিন পেতে অসুবিধে হত না। তবে পুলিশেরও কিছু করার নেই। কারণ, নির্বাচনের কারণে সমস্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা বাধ্যতামূলক ছিল।” জঙ্গিপুর উপসংশোধনাগারের উপ অধিকর্তা বিশ্বজিৎ বর্মন বলছেন, “গরিব শেখের অবস্থা সঙ্কটজনক। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে বহরমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

Court Strike Cancer Patient
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy