Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফের বরাভয় বাহিনীতে!

কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্বিকার চোখের সামনেই খুন হয়েছিলেন এক কংগ্রেস কর্মী।

কান্দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ ছবি: গৌতম প্রামাণিক

কান্দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

বুথ পাহারায় ফের সেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাজর ঝুলিয়ে রাখল নির্বাচন কমিশন! আজ, সোমবার জেলার নওদা এবং কান্দি, দুই কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন। কমিশনের তরফে এ বারও ঢালাও আশ্বাস মিলেছে— বুথের দায় সামাল দেবে জংলা পোশাকের কেন্দ্রীয় বাহিনী।

এমন প্রতিশ্রুতি নতুন নয়। সপ্তাহ তিনেক আগে, লোকসভা নির্বাচনের আগেও ঘটা করে সাংবাদিকদের ডেকে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক পি উলাগানাথন একশো শতাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ভরসা দিয়েছিলেন। ২৩ এবং ২৯ এপ্রিল— জেলার ওই দুই নির্বাচন-দিনে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে মুর্শিদাবাদের মানুষ অবশ্য দেখেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, খাকি উর্দির রাজ্য পুলিশের দাপাদাপি।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্বিকার চোখের সামনেই খুন হয়েছিলেন এক কংগ্রেস কর্মী। চোখের সামনে খুন, বাধা দিলেন না? কর্তব্যরত জওয়ানের জবাব মিলেছিল, ইভিএম রক্ষা করাই তাঁর কাজ। তা হলে?

নওদা এবং কান্দি— জেলার দুই কোণেই গন্ডগোলের সম্ভাবনা দেখছে সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই। এবং তাঁদের সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্লিপ্তির সেই চেনা চেহারাও। নির্বাচনের আগে, এ বারও প্রশাসনিক ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক পি উলাগানাথন বলেছেন, ‘‘দু’টি বিধানসভার সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।’’

কিন্তু ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দুই কেন্দ্রের আনাচ কানাচে রুট মার্চ করলেও তাঁদের উপস্থিতি আদৌ নির্ঝঞ্ঝাট ভোটের ভরসা কি রাখছেন নেতা-কর্মী-ভোটার? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

নওদা এবং কান্দির উপনির্বাচনে যতাক্রমে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৭২৫ ভোটার এবং ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৫০০ ভোটার ৪ এবং ৫ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।

কিন্ত তাঁরা কতটা ‘নির্ভয়ে’ ভোটে দেবেন, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিজেপি’র জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে কাজ করে। আমরা দেখেছি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্তেও ভগবানগোলায় ভোটকেন্দ্রের মধ্যেই খুন হয়েছে। ভরসা করি কী করে!’’

জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘প্রশাসনের কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকলে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারতেন। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে সে ভরসা আর রাখতে পারলাম কোথায়!’’

তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস অবশ্য বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী এল কি গেল তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্দির ২৫০টি বুথের মধ্যে ৬২টি অতিস্পর্শকাতর, ১২৩টি স্পর্শকাতর এবং ৬৫টি বুথ স্বাভাবিক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য দিকে নওদার ২৬৭টি বুথের মধ্যে ৯৯টি অতি স্পর্শকাতর, ৮২টি স্পর্শকাতর, এবং ৮৬টি বুথ স্বাভাবিক।

ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দুই কেন্দ্রের ২৫৩টি এলাকারা ৩৫০ কিলোমিটার এলাকায় রুট মার্চ করেছে। উলাগানাথনের ঘোষণা, ‘‘শনিবার সন্ধ্যায় প্রচার পর্ব শেষ হয়েছে। বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে এক সঙ্গে পাঁচ জন থাকতে পারবেন না। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kandi Central Force Assembly By Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE