কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস হত্যা মামলায় ফের সাক্ষ্য দিলেন সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার। বুধবার বিধাননগরের ময়ূখ ভবনে বিশেষ আদালতের বিচারক জয়শঙ্কর রায়ের এজলাসে সিআইডি অফিসার কৌশিক বসাকই ছিলেন এ দিনের একমাত্র সাক্ষী। তিনি এই মামলার শেষ সাক্ষীও বটে।
২০১৯ সালের ৮ মে প্রথম চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। তাতে মোট তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়— অভিজিৎ পুন্ডারি, নির্মল ঘোষ এবং সুজিত মণ্ডল। তারা তিনজনই এখন জেল হেফাজতে রয়েছে। দ্বিতীয় চার্জশিট দেওয়া হয় ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। তাতে অভিযোগ আনা হয়েছিল রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে এবং সন্দেহভাজন হিসাবে তৎকালীন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম রাখা হয়। ওই বছরেই ৫ ডিসেম্বর জমা দেওয়া তৃতীয় চার্জশিট ছিল মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে।
এর আগে গত ১২ এবং ২৬ সেপ্টেম্বরেও তদন্তকারী অফিসার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দু’দিনই কিছুক্ষণ পর সরকারি কৌঁসুলির তরফে বিচারকের কাছে শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হয়। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ শুনানি শুরু হয়। সাক্ষী আদালতে জানান, সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় তিনি মোট তিনটি চার্জশিট দিয়েছেন।
২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর আগের রাতে হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হয়েছিলেন যুূব তৃণমূলের তৎকালীন নদিয়া জেলা সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস। স্থানীয় মাজিদপুর দক্ষিণপাড়ার ফুলবাড়ি ফুটবল মাঠে ‘আমরা সবাই ক্লাব’-এর সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনের পর মঞ্চের সামনে চেয়ারে বসে যখন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার সময়ে খুব কাছ থেকে তাঁর মাথায় গুলি করা হয়। প্রথমে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে তদন্তের ভার নেয় সিআইডি।
এ দিন শুনানির শুরুতেই সাক্ষী জানান যে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ তিনি একটি ত্রিপল, একটি সবুজ প্লাস্টিক চেয়ার এবং দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন। ওই বছর ৫ সেপ্টেম্বর তিনি চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরি থেকে একটি রিপোর্ট সংগ্রহ করেন। কয়েকটি ফোন নম্বরও তিনি সংগ্রহ করেছিলেন। সাক্ষীর দাবি, ওই নম্বরগুলির মাধ্যমে অভিযুক্তদের সঙ্গে জগন্নাথ সরকারের কথোপকথন হয়েছিল বলে তিনি জানতে পারেন।
তদন্তকারী অফিসার জানান, ২০২০ সালের ১১ মার্চ তিনি আতিয়ার ধাবক এবং আলাউদ্দিন মণ্ডল নামে দু’জনকে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠিয়েছিলেন। পরে সেই জবানবন্দি সংগ্রহ করে তিনি জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় চার্জশিট দাখিল করেন। ওই বছরই ৪ ডিসেম্বর তিনি সঞ্জিত বিশ্বাস ও সুব্রত মণ্ডল নামে দু’জনের বক্তব্য নথিভুক্ত করেন। এর পর মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তৃতীয় চার্জশিট দাখিল করা হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)