বুধবার সকালে শ্রীবাসঅঙ্গন ঘাটে ‘ডিউটি’ করছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার সুদীপ বিশ্বাস। হঠাৎ তাঁর নজর পড়ে এক মহিলা তলিয়ে যাচ্ছেন। মুহূর্তের মধ্যে থানা থেকে দেওয়া লম্বা দড়ি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন সুদীপ। এগিয়ে আসেন ঘাটে স্নান করতে আসা আর এক যুবক। ছুঁড়ে দেওয়া দড়ি কোনও রকমে ধরে ফেলেন ওই মহিলা। বড় কোনও বিপদ ঘটার আগেই তাঁকে জল থেকে তুলে আনেন ওঁরা।
মাস কয়েক আগেই শান্তিপুর ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসনের সতর্কবার্তা ছিল— ঘাটেই রাখুন ব্যবস্থা, যাতে অযথা জলে ডুবে প্রাণহানি না হয়। সে বার্তা যে নবদ্বীপে পৌঁছিয়েছে, এ দিনের ঘটনায় তা অন্তত স্পষ্ট হল।
অথচ, এক দিন আগেই জেলার অন্য প্রান্ত তেহট্টে নৌকাডুবির পরে বোঝা গিয়েছিল সেই সব প্রস্তুতি ছিঁটেফোটাও ঘাটে ছিল না।
এ দিন, নবদ্বীপ দণ্ডপাণিতলার বাসিন্দা সীমা দাস বলেন, ‘‘স্নান করতে গিয়ে বেখেয়াল হয়ে পড়ছিলাম। হঠাৎই বুঝতে পারি পায়ের তলায় মাটি নেই। তখন আমার বুক জল। আর ভারসাম্য রাখতে পারিনি। ডুবে যেতে থাকি। হঠাৎ সামনে একটা দড়ি পেয়ে চেপে ধরি। ওঁরাও আমাকে ধরে ফেলে।”
গঙ্গায় স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু নবদ্বীপের নৈমিত্তিক বিষয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জলে ডুবে মৃতের সংখ্যা ৯ জন। এর মধ্যে শুধু বহিরাগত নয়, স্থানীয় মানুষও গঙ্গায় ডুবে মারা গিয়েছেন। কিন্ত তা বলে গৌর-গঙ্গার দেশে স্নান বন্ধ হবে নাকি! তাই জলে ডুবে মৃত্যু ঠেকাতে সম্প্রতি পুলিশের তরফে নবদ্বীপের প্রতিটি স্নানের ঘাটে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সিভিক ভলান্টিয়ারের নজরদারি শুরু হয়েছে। গঙ্গায় স্নান করতে আসা মানুষজনের প্রতি নজরদারিই কাজ। সঙ্গে থাকছে লম্বা দড়ি। সেই নজরদারির সুফল মিলল বুধবার সকালে। নদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) তন্ময় সরকার জানান, “গঙ্গার ঘাটে দড়ি হাতে নজরদারির ইতিবাচক ফল মেলায় আমরা খুশি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy