সেই সিভিক ভল্যান্টিয়ার। নিজস্ব চিত্র
ফরাক্কার বল্লালপুরে জাতীয় সড়কের উপরে সেতু পেরনোর সময়ে তোলা না পেয়ে এক লরি চালককে মারধরের অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভল্যান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে এই ঘটনায় লরি চালকের চেঁচামেচিতে এলাকার মানুষ জড়ো হয়ে যান। বিক্ষোভের মুখে পড়ে কোনও রকমে পালিয়ে বাঁচেন সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা। পরে রিপন শেখ নামে ফরাক্কা থানার ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ারকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, বল্লালপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা প্রতি দিনই লরি চালকদের কাছ থেকে তোলা আদায় করেন। এ দিন মালদহ থেকে লরি নিয়ে আসছিলেন এক চালক। এক সিভিক ভল্যান্টিয়ার তাঁর কাছ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ। ওই লরি চালক তা দিতে অস্বীকার করেন। তা নিয়ে সিভিক ভল্যান্টিয়ার রিপনের সঙ্গে লরি চালকের বচসা বেধে যায়।
চালকের দাবি, “আমি ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ারকে বলি, তোমাদের সঙ্গে পুলিশ কই? পুলিশের নাম করে টাকা চাইলে তা দেব কেন?” তাঁর অভিযোগ, এর পরেই রিপন শেখ লরির পাদানিতে উঠে তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করে। মারে তাঁর ডান হাত ফেটে যায়, ভাল মতো ফুলেও ওঠে। মরিয়া হয়ে চালক গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় নেমে এসে চিৎকার জুড়ে দেন। হইচই শুনে এলাকার মানুষজন চলে। লরি চালক রিপনকে দেখিয়ে তাঁদের কাছে গোটা ঘটনাটা জানান। সব শুনে এলাকার লোকও খেপে ওঠে। তাঁরা কৈফিয়ত চান, কেন এ ভাবে আদায়ের জন্য জুলুম চালানো হবে। বিক্ষোভ শুরু যায়। বেগতিক দেখে পিছু হটেন সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা। তাড়া খেয়ে পালিয়ে বাঁচেন সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা। এলাকার লোকজনই লরি চালককে এক স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে শুশ্রূষা করেন।
স্থানীয় এক চায়ের দোকানদারের অভিযোগ, “প্রতি দিনই এ ভাবে লরি থামিয়ে পয়সা আদায় করে সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা। পুলিশের গাড়িও থাকে কোনও কোনও সময়। তবে এ ভাবে মারধর বিরল ঘটনা।”
গোলমালের মধ্যে রাস্তায় আটকে পড়ে বহু লরি। তেমনই একটি লরির চালক, পাকুড়ের বাসিন্দা সামাউল শেখের অভিযোগ, “শনিবার সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা পয়সা তুলছিল। কিন্তু বহু দিন ধরেই স্থানীয় কিছু লোক পুলিশের নামে বল্লালপুর মোড়ে পয়সা আদায় করে। বেইলি সেতু দিয়ে লরি যাতায়াত নিষিদ্ধ। তাই যানজটের সময় ওই সেতু দিয়ে লরি নিয়ে যাওয়ার জন্য টাকা আদায় করে তারা। ঝামেলা এড়াতে দিতেই হয়।”
ফরাক্কা থানায় আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন,“লরি চালককে মারধর করে থাকলে অন্যায় করেছে ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ার। যানজট রুখতেই ওঁদের বল্লালপুরে ডিউটিতে রাখা হয়েছে। তার বদলে তারা যদি রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা আদায় করে থাকে, তবে ঘটনার তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর, লরি চালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যার বিরুদ্ধে, রিপন শেখ নামে ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ার সত্যিই ওই অপরাধ করে করেচেন বলে প্রমাণ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy