Advertisement
E-Paper

অবশেষে শিশুসুরক্ষায় কমিটি তৈরি গ্রামস্তরে

পিংলা থেকেই শিক্ষা নিয়ে জেলায় শিশু সুরক্ষায় জোর দিল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের দাবি, শিশু সুরক্ষায় জোর দিতে ৯০ শতাংশ গ্রাম সংসদে শিশু সুরক্ষা কমিটি গড়ার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলিতে দ্রুত কমিটি গড়া হবে। কমিটি গড়া শেষ হলে অক্টোবর মাস থেকে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হবে। গোটা প্রক্রিয়া শেষ হলে জেলায় শিশু সুরক্ষার প্রকৃত চিত্রটি স্পষ্ট হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০১:১৫

পিংলা থেকেই শিক্ষা নিয়ে জেলায় শিশু সুরক্ষায় জোর দিল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনের দাবি, শিশু সুরক্ষায় জোর দিতে ৯০ শতাংশ গ্রাম সংসদে শিশু সুরক্ষা কমিটি গড়ার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলিতে দ্রুত কমিটি গড়া হবে। কমিটি গড়া শেষ হলে অক্টোবর মাস থেকে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হবে। গোটা প্রক্রিয়া শেষ হলে জেলায় শিশু সুরক্ষার প্রকৃত চিত্রটি স্পষ্ট হবে।

জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অর্জুন দত্ত জানান, ২৬টি ব্লকে শিশু সুরক্ষা কমিটি তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে। ৪০৪৫টি মতো গ্রাম সংসদ রয়েছে জেলায়। এ পর্যন্ত ৩৬০০ গ্রাম সংসদে ও ৩০টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের কাজ শেষ। অক্টোবর মাস থেকে সংসদ কমিটিগুলির প্রশিক্ষণ শুরু করে দেওয়া যাবে। প্রতিটি গ্রামস্তরে ৪০ জন প্রতিনিধিকে দু’দিন ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাতে কমিটির সদস্যদের কী কাজ, পরিস্থিতির মোকাবিলায় কখন কী করণীয় তা বলা হবে।

প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, কমিটিগুলি কাজ শুরু করলে জেলায় শিশু সুরক্ষার বিষয়টি জোরদার হবে। তাঁদের আশা, সব ঠিকঠাক চললে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে শিশু সুরক্ষার মূল কাজগুলি শুরু করা যাবে।

পিছিয়ে পড়া মুর্শিদাবাদ জেলায় শিশু সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এত দিন সামাজিক, প্রশাসনিক কোনও স্তরেই তেমন গুরুত্ব পায়নি। পিংলার বিস্ফোরণ কাণ্ডে নতুন চাঁদরা গ্রামের আট নাবালকের মৃত্যুর ঘটনা সেই চিত্রটাকে বেআব্রু করে দেয়। জেলাশাসকের দেওয়া তথ্যে ‘মুর্শিদাবাদ জেলা বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম ও নারী পাচারে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে’ বলে জানানো হয়েছে। সেই দুরবস্থা ঘোচাতে এই পদক্ষেপ বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন।

জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির সদস্যা দিলরুবা সরকার জানান, মুর্শিদাবাদে শিশু সুরক্ষার কোনও কাজই সেই অর্থে হয়নি। গোটা বিষয়টাই ‘ডিফাংড’ অবস্থায় ছিল। তবে তাঁর কথায়, শুধু কমিটি গড়লেই হবে না। সক্রিয়তা ও আন্তরিকতা থাকা চাই। এ ব্যাপারে স্কুলগুলির পাশাপশি পঞ্চায়েতগুলিকেও সক্রিয় হতে হবে। তবে তিনিও মানছেন, মানুষ আগের চেয়ে সচেতন হয়েছেন। বেশি সংখ্যায় ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে। বাল্যবিবাহ বন্ধের ঘটনা প্রতিদিনই জেলার কোথাও না কোথাও ঘটছে।

এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জেলা কো-অর্ডিনেটর জয়ন্ত চৌধুরী জানাচ্ছেন, জেলায় শিক্ষার হার যত বাড়বে শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি তত সুনিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে এই কমিটি গড়ে উঠলে গ্রামস্তরে থেকেই খবর পৌঁছে যাবে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পর্যায়ের কাছে।’’

সরকারি হাসপাতালের এক পদস্থ চিকিৎসক জানান, গত এক দশকে অনেকটাই এগিয়েছে মুর্শিদাবাদ। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় ২০০১ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যেখানে ছিল ২৩.৭৬ শতাংশ, ২০১১ সালে তা কমে ২১.০৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার হার ৫৪.৩৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৭.৫৩ শতাংশ। ২০০৫ সালেও যেখানে হাসপাতালে প্রসবের হার ছিল ৩৩ শতাংশ, এখন তা ৭০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ইসলামপুর, লালগোলা, ধুলিয়ানের মতো এলাকায় সে সংখ্যা আরও বেশি। ফলে শিশু মৃত্যু কমেছে। জেলা জুড়ে এখন গ্রামে গ্রামে কয়েক হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সবই জেলার সচেতনতা বৃদ্ধির প্রভাব।

সম্প্রতি সুতিতে ১৩ বয়সের নাবালিকাকে বিয়ে করতে এসে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় বিহারের গয়ার বিবাহিত এক যুবক। ওই ঘটনায় স্থানীয় গ্রামবাসী ও প্রশাসন যে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছেন তা সচেতনতা বৃদ্ধির ফল বলেই মনে করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জেলা কো-অর্ডিনেটর জয়ন্ত চৌধুরী।

Committee child protection pingla bomb blast
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy