E-Paper

পুজো ঘিরে সম্প্রীতির আবহ শমসেরগঞ্জে

পাশেই চায়ের দোকান চালান রশু শেখ। বলছেন, “দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আসতে থাকেন লোকজন।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৪
ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো।

ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো। নিজস্ব চিত্র ।

নতুন করে জেলায় মন্দির–মসজিদ বিতর্ক চেষ্টার আবহেই মঙ্গলবার এক সম্প্রীতির উৎসব দেখল শমসেরগঞ্জের ধুলিয়ান শহর। শহর ফিরল পুরনো মেজাজে। শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কামাথ পল্লিতে প্রাচীন কালীপুজোকে ঘিরে শহর ফিরল চেনা চেহারায়।

একশো শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ধুলিয়ান শহরের কামাথ পল্লিতে শত বছরের প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন মন্দিরে মঙ্গলবার ঘটা করে সম্পন্ন হল ঐতিহ্যবাহী “মাঠ কালীপুজো”।

বহু প্রাচীন মন্দির। কবে কিভাবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সে ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করার মতো প্রবীণ মানুষ নেই বললেই চলে। স্থানীয় বাসিন্দা আলি হোসেন বলছেন, “মন্দিরের আশপাশে এক জনও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নেই। প্রতি বছর ধুমধামের সঙ্গে পুজো হয় এই সময়ে। মন্দির ঘিরে আছেন সংখ্যালঘুরা। এই পুজোয় আমরা দান করি। আমরা মানসিক দিই। এটাই শমসেরগঞ্জের আসল চেহারা।”

পাশেই চায়ের দোকান চালান রশু শেখ। বলছেন, “দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আসতে থাকেন লোকজন। পুজোর আয়োজন চলে ২টো পর্যন্ত। সাড়ে ৪টে পর্যন্ত উপচে পড়ে ভিড়। এ বারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ২২ বছর বয়স হল। বাবারাও দেখে এসেছে এ পুজো। ক’দিন আগের যে অশান্তি, তার কোনও প্রভাব পড়েনি এই মন্দিরের উপরে। বলতে গেলে আমরাই আগলে রাখি এই মন্দিরকে। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি।”

পুজো উপলক্ষে সংখ্যালঘু পাড়া জুড়ে এদিন ছিল উৎসবের পরিবেশ। দীর্ঘ দিন ধরে ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা বহন করে আসছে এই পুজো। সেই পরিবেশই ফের ফিরল সাত মাস আগের হিংসা বিধ্বস্ত ধুলিয়ানে। কে নেই সেখানে ? ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি আনোয়ার শাহাদাত, ফিরোজ শেখ, সুদেব গুহ, মিলন ঘোষ।

আনোয়ার শাহাদাত বলেন, “কয়েক মাস আগে সম্প্রীতির শহর ধুলিয়ানকে কলুষিত করার চেষ্টা হয়েছিল। এটা মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের তৈরি, যাতে রয়েছে দুই গোষ্ঠীরই কিছু লোক। কিন্তু আমাদের ওয়ার্ডে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। বহু দিন ধরে এই মন্দির সম্প্রীতির বার্তা বহন করছে।”

বিজেপির জেলার সহ সভাপতি মিলন ঘোষ বলেন, “আমার জন্মের অনেক আগে থেকেই এই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় পুজো হয়ে আসছে। সকলেরই পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে এতে।ধুলিয়ানের ঘটনা্র পুনরাবৃত্তি হোক কেউ চাই না। দুই সম্প্রদায়ের মানুষই অতীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সকলেই ভুলতে চান সেই স্মৃতিকে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Samsherganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy