E-Paper

বাংলাদেশি হলেও রয়েছে এপিক, ফর্ম মিলেছে এসআইআরে

প্রায় ছয় মাস আগে চিকিৎসা ভিসায় এ রাজ্যে এসেছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক অভিজিৎ সাহা। বাংলাদেশ ফেরত যাওয়ার সময় অভিবাসন দফতরের সন্দেহে হয়।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:০১
অভিজিৎ সাহার বাড়ি। মঙ্গলবার রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহার বাড়ি। মঙ্গলবার রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র

রানাঘাট শহরে কাটছিল জীবন। তিনতলা বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাস৷ ভোটার তালিকায় নাম আছে। আধার কার্ডও আছে। সব মিলিয়ে তিনি ‘ভারতীয় নাগরিক’। কিন্তু অভিবাসন দফতরে যেতেই সামনে এল আসল পরিচয়। প্রকাশ্যে এসেছে অবৈধ ভাবে ভারতীয় নাগরিক হয়ে ওঠার গল্প।

প্রায় ছয় মাস আগে চিকিৎসা ভিসায় এ রাজ্যে এসেছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক অভিজিৎ সাহা। বাংলাদেশ ফেরত যাওয়ার সময় অভিবাসন দফতরের সন্দেহে হয়। চলে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ। তাতেই ধরা পড়ে—অভিজিতের রয়েছে ভারতীয় ভোটার কার্ড (এপিক)এপ্ক , আধার কার্ড। এমনকী তাঁর নামে এসেছে এসআইআর ফর্মও। সেই ফর্মে বেহালা পূর্ব বিধানসভা এলাকার এক মহিলাকে ‘ঠাকুরমা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর কলকাতা আঞ্চলিক অভিবাসন দফতর থেকে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো চিঠিতে গোটা ঘটনাই নথিবদ্ধ হয়। তাতে উল্লেখ— “বাংলাদেশ ফেরার মুহূর্তে ধরা পড়েন অভিজিৎ। তাঁর স্ত্রী সোহিনী বণিকের ভারতীয় পাসপোর্ট থাকায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অভিজিৎ জানান, তিনি বেআইনি ভাবে ভোটার কার্ড ও আধার বানিয়েছেন।” সেগুলি বাতিল করারও অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে। গত অক্টোবর মাসেই কমিশন রানাঘাটের মহকুমা শাসকের দফতরে চিঠিটি পাঠিয়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রানাঘাট শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লি এলাকায় তিনতলা বাড়িতে দীর্ঘদিন বসবাস অভিজিতের। রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের ২৭৯ নম্বর বুথ অম্বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাঁর ভোট নথিভুক্ত। কিন্তু ২০২১ সালের ১ জানুয়ারির বাংলাদেশি পাসপোর্ট বলছে, অভিজিতের জন্মস্থান নরসিংডি, জন্মের তারিখ ৬ অক্টোবর, ১৯৯৩। অথচ এই দেশের ভোটার কার্ডে জন্ম-তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩। তাঁর বাবা আছেন বাংলাদেশে।

মঙ্গলবার অভিজিৎ নিজেই স্বীকার করেছেন, “আমার জন্ম বাংলাদেশে।” তিনি বলেন, “২০০৩ সালে ভারতে এসেছি। রানাঘাটের দেবনাথ বয়েজ় ও ভারতী উচ্চ বিদ্যালয় স্কুলে পড়াশোনা করি। তার পর কলেজে ভর্তিও হই এখানেই। বাবার ব্যবসার কারণে আমাকে মাঝে-মধ্যেই বাংলাদেশে যাতায়াত করতে হয়েছে।’’

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক বুথ লেভেল অফিসারকে (বিএলও) নিয়ে তাঁর বাড়িতে গিয়ে নথিপত্র খতিয়ে দেখেছেন। গত ৩০ নভেম্বর শেষ হয়েছে অভিজিতের ভিসার মেয়াদ।

সংশ্লিষ্ট বিএলও সন্তু তামাঙ্গ বলেন, “ওঁর ফর্ম আমি হাতে পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু ডিজিটাইজ়েশন করা হয়নি। সব নথি ঊর্ধ্বতনেরা যাচাই করছেন।” রানাঘাটের নির্বাচনী আধিকারিক অনির্বাণ বসু বলেন, “ওই নাম যাতে সংশোধিত ভোটার তালিকায় না ওঠে তার জন্য আদেশ জারি হবে। ভারতীয় নাগরিক নন, অথচ এ দেশের ভোটার তালিকায় নাম উঠছে— এটা তো হতে পারে না! পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat Bangladesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy