এক মনে কম্পিউটারে। লালবাগের গুধিয়া মাঝেরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক স্তর থেকে কম্পিউটার শেখায় বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুল। বঞ্চিত শুধু সরকার পোষিত স্কুলের ছেলেমেয়েরা।
প্রাথমিক স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার টাকা দেয় না। তাই নিজেদের পকেটের টাকায় তিনটি কম্পিউটার বসিয়ে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছেন লালবাগের শিশুভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে মোট চার জন শিক্ষক। তাঁরা ছাড়াও সাহায্য করেছেন লালবাগের গুধিয়া মাঝেরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রীতমকুমার মণ্ডল। ৬০ হাজার টাকায় তিনটি কম্পিউটার কেনা হয়েছে। গত অগস্ট থেকে ক্লাস হচ্ছে নিয়মিত।
কৃষ্ণনগর লাগোয়া গোয়ালদহ-মহিষন্যাংড়া গভর্নমেন্ট স্পন্সরড ফ্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও গত বছর মার্চ থেকে শুরু হয়েছে কম্পিউটার ক্লাস। মায়াপুরের একটি অসরকারি সংস্থার দান করা কম্পিউটার দিয়ে সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
শিশুভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজয় চক্রবর্তী জানান, ২০১০ সাল থেকে স্কুলটিতে একটি কম্পিউটার রয়েছে। তাতে অফিসের কাজ করা হয়। অনেক অভিভাবক চাইছিলেন, ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটার শেখানোর ব্যবস্থা হোক। কম্পিউটার ল্যাবে পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
সুজয় নিজে কম্পিউটার চালাতে ভালই জানেন। তা ছাড়া স্থানীয় যুবক অরিন্দম রায় নিখরচায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া রাজ মণ্ডলের মা মামনি মণ্ডল বলেন, “বেসরকারি স্কুলের মতো এই স্কুলেও কম্পিউটার ক্লাস চালু হওয়ায় আমরা অনেকটা স্বস্তি হয়েছি।” গুধিয়া মাঝেরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমাদের চক্রে শিশুভারতী সব দিক দিয়ে ভাল কাজ করছে। তাই আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওদের কম্পিউটার কেনার জন্য টাকা দিয়েছি।” তিনি জানান, তাঁদের স্কুলে পরিকাঠামোর উন্নতি হলে সেখানেও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। শিশুভারতীর মতো স্কুলগুলি তখন সাহায্য করবে বলে তাঁর আশা।
গোয়ালদহ-মহিষন্যাংড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজয় সরকার বলেন, “এখন অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলেই কম্পিউটার ক্লাস হয়। ফলে অনেকেই ছেলেমেয়েদের আমাদের স্কুল থেকে ছাড়িয়ে ওই সব স্কুলে পাঠায়। ছাত্রছাত্রী ধরে রাখতে কম্পিউটার শেখানো জরুরি।’’
নদিয়ার স্কুলটিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে টিফিনের পরে এবং ছুটির আগে ক্লাস হয়। স্কুলের শিক্ষক অঙ্কুর প্রামাণিক বা অনন্যা নাহারাই ক্লাস নেন। রাফিকা বিবি নামে এক অভিভাবক বলেন, “এখন কম্পিউটারের যুগ। স্কুল উদ্যোগী হওয়ায় ভাল লাগছে।”
নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলেন, “সরকারি ভাবে এখনও কোনও স্কুলে কম্পিউটার দেওয়া হয়নি। তবে ‘স্মার্ট ক্লাস’-এর জন্য ৩৭টি স্কুলকে আধুনিক প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে। আরও একশো স্কুলে প্রজেক্টর দেওয়ার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে।” মুর্শিদাবাদ জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসের জন্য প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিক স্কুলে কোথাওই কম্পিউটার দেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy