Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সুতিতে জাকির-ইমানি, বিবাদ ফের সামনে এল

দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থায় অপসারিত হলেন সুতি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের আনিকুল ইসলাম। বুধবার তিনি ১৫-০ ভোটে হেরে যান।

মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ নাক দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাকিবা খাতুনের। ওই রাতেই তাকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বসে পরীক্ষা দিল সে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ নাক দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাকিবা খাতুনের। ওই রাতেই তাকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বসে পরীক্ষা দিল সে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
সুতি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থায় অপসারিত হলেন সুতি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের আনিকুল ইসলাম। বুধবার তিনি ১৫-০ ভোটে হেরে যান। তবে, তৃণমূল সূত্রে খবর, এই অনাস্থার পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন মন্ত্রী জাকির হোসেনের অনুগামীরা। স্থানীয় বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের অনুগামী আনিকুলের তাই ভরাডুবি হয়েছে।

২৯ সদস্যের পঞ্চায়েত সমিতিতে কংগ্রেস ১২টি, বামেদের ১১টি আসন ছিল। নির্দল ও তৃণমূলের দখলে তিনটি করে আসন। পরে সভাপতি সিপিএমের আনিকুল ইসলাম-সহ বাম ও কংগ্রেসের ১২ জন তৃণমূলে যোগ দেন। সভাপতি হন আনিকুল। এলাকায় আনিকুল যে ইমানির অনুগত তা সকলেই জানতেন। তবে তাঁকে সারনোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল জাকির ক্ষমতায় আসার পরে।

সুতির মানুষ, অবশ্য জাকির-ইমানি লড়াই দেখছেন বেশ কিছু দিন ধরে। যে লড়াই একদা ছিল ব্যবসায়িক কারণে, জাকির ক্ষমতাশীল হয়ে ওঠার পরে সেই যুদ্ধ বদলে গিয়েছিল রাজনীতিতেও।

ইমানি ছিলেন জেলা কংগ্রেসের পুরনো নেতা। জেলায় কংগ্রেসের প্রভাব থাকার সময় জাকিরও যে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকেছিলেন সে কথাও কারও এ অজানা নয়। ২০১৫ সালের ইমানি দলবদল করেন। পরে জাকিরও ভিড়ে যান তৃণমূলে।

তাঁদের পুরনো দ্বন্দ্ব মেটাতে পাশাপাশি বসিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেন দিন কয়েক আগেও জানিয়ে ছিলেন, ‘দুই হাত এক হল আজ’। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে সুতি ২ পঞ্চায়েত সমিতি দখলকে কেন্দ্র করে। সপ্তাহ তিনেক আগে ইমানির অনুগামীরা ১৫ জনের সমর্থনে অনাস্থা এনে সহ-সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেন জাকির অনুগত কাওসার আলিকে। দু’সপ্তাহ কাটতে না কাটতে এক সদস্য শিবির বদল করেন। এর ফলে জাকির অনুগামীরা ইমানিপন্থী তৃণমূল প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ফের সহ-সভাপতি হন কাওসার আলি। একই ভাবে বুধবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ থেকে ইমানি অনুগত আনিকুলকে অপসারিত করা হয়।

তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর ইমানি বিশ্বাসের দাবি, ‘‘এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা সুতিতে কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। জেলায় দলের নেতারা সব জানেন।’’ এ দিকে জাকিরের দাবি, “সদস্যেরা যা ভাল বুঝেছেন সেটাই করেছেন। গরিষ্ঠতা যার সভাপতি তো তিনিই হবেন।”

বামদের সঙ্গে জাকিরপন্থীদের গাঁটছড়া বাঁধার কথা স্বীকার করেছেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অমল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলকে সরাতে অনাস্থা বাম সদস্যেরা সমর্থন করেছেন।’’

জাকির অনুগামীদের সমর্থনের কথা মানছেন কংগ্রেসের সুতর ব্লক সভাপতি আলাফাজুদ্দিন বিশ্বাসও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের তোলাবাজদের ঠেকাতে অপেক্ষাকৃত ভাল তৃণমূলদের সমর্থন করেছি। এটা আমাদের রাজনৈতিক কৌশল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suti TMC Confilct
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE