রাজনীতিতে চমক শমশসেরগঞ্জে নতুন কিছু নয়। দলবদল করিয়ে পুরসভা ও পঞ্চায়েত দখলের রাজনীতিও সামসেরগঞ্জের মজ্জাগত। পুর রাজনীতির জবরদখলে কাউন্সিলারের অপহরণের ঘটনারও সাক্ষী রয়েছে শমশেরগঞ্জ।
তার বড় প্রমাণ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। চমক ১) দুপুর পর্যন্ত যিনি কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি, বিকেলেই তিনি তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে গিয়েছেন অনায়াসেই। চমক ২) এক বছর আগে থেকে জেলা তৃণমূলের সভাপতি ও পর্যবেক্ষকের ঘোষণা মত যাকে ঘিরে সামশেরগঞ্জে তৃণমূলের রাজনীতি আবর্তিত হয়েছিল ধুলিয়ানে, সেই মন্টু বিশ্বাস ওরফে রেজাউল হক ব্লক তৃণমূলের চেয়ারম্যান এবং জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ পদে থেকেও ‘ব্যাট’ হাতে দাঁড়িয়ে পড়েন নির্দল হিসেবে।
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় সেদিন খোদ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আমিরুল ইসলামের নাম দেখে চমকে উঠেছিল শমসেরগঞ্জ।
সেই নির্দল ‘তৃণমূল নেতা’ মন্টু বিশ্বাস শমসেরগঞ্জের কংগ্রেসি দুর্গে কংগ্রেসের ভোটে থাবা বসিয়েই ৪২৩৮৯ ভোট টেনে নেন। ফলে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মাত্র ১৭৮০ ভোটের ব্যবধানে জোট প্রার্থী সিপিএমকে হারিয়ে দখল নেয় শমসেরগঞ্জের।
কিন্তু সেই থেকেই আমিরুলের উত্থান। যার আঁচ পড়েছে তৃণমূলের অন্দরেও।
তাই তৃণমূলের অন্তর্কোন্দল এখন ধুলিয়ানে সর্বত্রই মুখরোচক আলোচনার বিষয়। বার বার অশান্ত হয়েছে শমসেরগঞ্জ। বোমা, গুলি এবং একাধিক মৃত্যু মিছিলের সাক্ষী হয়ে থেকেছে ধুলিয়ান।
২০১৬ সালের বিধানসভায় শমসেরগঞ্জে প্রথম প্রার্থী দেয় তৃণমূল। ভোট কাটাকুটির সুবাদে ১৭৭৫ ভোটে জিতে মুখ রক্ষা করলেও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও ফের ৭৯৩৯ ভোটে এগিয়ে থেকে প্রমাণ করে দেয় শমসেরগঞ্জে অটুট কংগ্রেসের গড়।
এক বছরও পার হয়নি সেই নির্বাচনের।
জেলা পরিষদের তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক বিপ্লব ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীকেই তাঁর নেতা ঘোষণা করেছেন। খুনের মামলায় তাকে জড়িয়ে দেওয়ায় তিনি সহ তার অনুগতরা হয় জেলে না হয় পালিয়ে রয়েছেন। শমসেরগঞ্জ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি হবিবুর রহমান বলছেন, “এখানে কংগ্রেসের প্রভাব এখনও অটুট। তাই সিপিএমকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হলে সেই কংগ্রেসি ভোটারদের জোটের দিকে টেনে আনা সম্ভব কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’ গত বিধানসভায় এই বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই লড়তে গিয়েই জঙ্গিপুর ও সাগরদিঘিতে তৃণমূলের জয় সহজ হয়েছে। সিপিএমের পূর্বতন বিধায়ক তথা জেলা কমিটির সদস্য তোয়াব আলি অবশ্য মনে করেন, “আসন সমঝোতা হবে একটা পলিসির উপর দাঁড়িয়ে। তাতে শমসেরগঞ্জে কে লড়াই করবে তা বলা মুস্কিল। তবে সিপিএম জোট ধর্ম বজায় রেখেই লড়বে মুর্শিদাবাদে। ”