Advertisement
E-Paper

আজ রায়, অপেক্ষায় গাংনাপুর

ওই ঘটনার পরে লাঞ্ছিত মাদার রানাঘাট ছে়ড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন, প্রায় কারওরই তা জানা নেই।

সৌমিত্র সিকদার

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৬
এই সেই কনভেন্ট। ফাইল চিত্র

এই সেই কনভেন্ট। ফাইল চিত্র

আড়াই বছর ধরে দিনটার জন্য প্রহর গুনেছে গাংনাপুর ডনবস্কো পাড়া। আজ, মঙ্গলবার কলকাতা নগর দায়রা আদালতে বিচারক রায় ঘোষণা করবেন। তার জন্য রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা গাংনাপুরে। কনভেন্ট অফ জেসাস এন্ড মেরি-তে তো বটেই!

যারা রাতের অন্ধকারে পাঁচিল টপকে কনভেন্টে ঢুকে শুধু লুঠপাট নয়, সত্তরোর্ধ্ব ‘মাদার সুপিরিয়র’-কে ধর্ষণ করেছিল, তাদের কঠোর সাজা শোনার জন্য মুখিয়ে সকলেই।

ওই ঘটনার পরে লাঞ্ছিত মাদার রানাঘাট ছে়ড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন, প্রায় কারওরই তা জানা নেই। কিন্তু তাঁর অপমান ভুলতে পারেননি কেউই।

রানাঘাট স্টেশন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে মিশন রেলগেটের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে কনভেন্ট অফ জেসাস এন্ড মেরি। ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ গভীর রাতে পাঁচিল টপকে ঢুকে নৈশপ্রহরীকে মারধর করে বেঁধে ফেলে জনা সাতেক দুষ্কৃতী। প্রশাসনিক ভবনে আলমারি ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকা, ল্যাপটপ, ক্যামেরা লুঠ করে তারা। তার পর চড়াও হয় লাগোয়া সন্ন্যাসিনী আবাসনে। এক দুষ্কৃতী চুয়াত্তর বছরের ‘মাদার সুপিরিয়র’কে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ভোরে মূল গেটের বাইরে থেকে তালা দিয়ে তারা পালায়।

ভোর থেকে কনভেন্টের গির্জার ঘণ্টা টানা বাজছে শুনে এলাকার মানুষ এসে জড়ো হয়ে যান। পরে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে জনতা শিয়ালদহ-রানাঘাট রেললাইন আর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। বেলা সাড়ে ১০টা থেকে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের মূল সড়ক। থমকে যায় ট্রেন চলাচলও। আসতে গিয়ে আটকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার তুলে নিয়ে দেওয়া হয়েছিল সিআইডি-কে। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে সালেম শেখ, গোপাল সরকার, মিলন সরকার, ওহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, খালেদার রহমান মিন্টু ওরফে ফারুক ও নজরুল ইসলাম ওরফে নজুকে ধরে। এত দিন নগর দায়রা আদালতে মামলার শুনানি চলেছে। এ বার রায় ঘোষণার পালা।

স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষিকা লিনা ডি রোজারিও বলেন, ‘‘এক সময়ে আফ্রিকায় ছিলেন মাদার। সেখানে জঙ্গলের জন্তু-জানোয়ারেরা তাঁর ক্ষতি করেনি। মানুষের বেশধারী শয়তানেরা সেটাই করল!’’ ডনবস্কো পাড়ার সিমসন রায় বলেন, “চাইলেও সে দিনের কথা ভোলা যায় না। সকালে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। অপরাধীরা যত কঠোর শাস্তি পায়, ততই মঙ্গল।” এলাকার কাকলি বিশ্বাস বলেন, “ওই ঘটনার পরে আমাদেরও স্বাভাবিক হতে বেশ কিছু দিন সময় লেগেছিল। সে দিনেই শাস্তির দাবিতে মাঠে নেমেছিলাম। সেই দিন এসেছে!”

কনভেন্টের কর্মী ও পড়ুয়াদের এ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা মানা। কিন্তু তাঁরা সকলেই বিচার চাইছেন। সেই সময়ে ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’ গড়েছিলেন স্থানীয় নাট্যকার, গায়ক, শিল্পী ও পড়ুয়ারা। সেই মঞ্চের সদস্য সুমন মজুমদার বলেন, “আমরা এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলাম। অপরাধীরা যেন বিন্দুমাত্র সহানুভূতি না পায়!”

Convent Rape Verdict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy