Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্যারোলে বাড়ি ফিরে পিঠটান খুনের আসামির

প্রায় চোদ্দ বছর আগে, এলাকার এক সিপিএম নেতা-খুনে মূল অভিযুক্তই ছিল আলিম। দিন কয়েক আগে, অসুস্থ মা’কে দেখার জন্য পাঁচ দিনের ছাড়া পেয়েছিল সে। তবে, জেলে তার ব্যবহারের জেরে আলিমের সঙ্গে কোনও প্রহরা দেওয়া হয়নি। আর, সেই সুযোগ নিয়েই গ্রামে ফিরে পাঁচ দিনের ছুটি কাটানোর পরে খোঁজ মিলছে না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

প্যারোলে মুক্তি হয়। তবে ফিরেও যেতে হয় দিন কয়েকের ব্যবধানে। কিন্তু কেউ না ফিরলে? আলিম মোল্লা তেমনই এক জন। পাঁচ দিনের প্যোলের মেয়াদ শেষে সে আর ফেরেনি। থানায় হাজিরা দিয়েও শেষ মুহূর্তে সে আর গারদে ফেরেনি। ডোমকলের সেখালিপাড়ার আলিমের কোঁজে এখন তাই এলাকা তোলপাড় করছে পুলিশ।

প্রায় চোদ্দ বছর আগে, এলাকার এক সিপিএম নেতা-খুনে মূল অভিযুক্তই ছিল আলিম। দিন কয়েক আগে, অসুস্থ মা’কে দেখার জন্য পাঁচ দিনের ছাড়া পেয়েছিল সে। তবে, জেলে তার ব্যবহারের জেরে আলিমের সঙ্গে কোনও প্রহরা দেওয়া হয়নি। আর, সেই সুযোগ নিয়েই গ্রামে ফিরে পাঁচ দিনের ছুটি কাটানোর পরে খোঁজ মিলছে না।

তবে, তার পরিবারের দাবি, থানায় হাজিরা দেওয়ার পরেই নিখোঁজ হয়েছে আলিম। সে ক্ষেত্রে পুলিশই তাকে কোথাও ‘গায়েব’ করেছে।

বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে ২৩ মে, ডোমকলের সেখালিপাড়ায় ফিরেছিল বছর পঁয়তাল্লিশের আলিম মোল্লা। তার পর, কখনও বাড়ি কখনও বা পড়শি গ্রামে শ্বশুরবাড়ি ঘুরে বেরিয়েছে সে। ২৮ মে দুপুরে থানায় হাজিরাও দিয়েছিল সে। কিন্তু বন্দিদের গুনতে গিয়ে টনক নড়ে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তাদের। খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আলিমের দেখা নেই। ২৯ মে থানায় অভিযোগ দায়ের হয় হয়েছে এ ব্যাপারে। বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার টি আর ভুটিয়া বলেন, ‘‘যাবতীয় নিয়ম মেনেই আলিমকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে, জেলে গুড কনডাক্ট বা ভাল আচরণের জন্য তার সঙ্গে কোনও পুলিশ প্রহরা ছিল না।’’

সময়টা ছিল ২০০৪ সালে ১৯ জানুয়ারির সিপিএমের শাখা সম্পাদক ও জুগিন্দা লোকাল সদস্য সামসুদ্দিন মণ্ডল খুন হন। নাম জড়ায় কংগ্রেস কর্মী বলে পরিচিত আলিমের। বছর পাঁচেক জেল খাটার পরে জামিনও হয়েছিল তার। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের তার জেল হয়।

জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তার মা আলেমন বেওয়ার আবেজদনে সাড়া দিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাকে। আলিমের মামা আজেদুল মোল্লা বলেন, ‘‘আলিমের মায়ের বয়স হয়েছে, শরীর খুব খারাপ। ছেলের মুখটা দেখতে ইচ্ছে করছিল বলেই তিনি আবেদন করেছিলেন।’’ এ দিন চার, টালির ছাউনি দেওয়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন সকলে। এক আত্মীয় অবশ্য জানান, আলিম যখন থানায় হাজিরা দিয়েছে থখন তার দায় পুলিশের। তাঁদের দাবি, পুলিশই তাকে গায়েব করেছে! জেলা পুলিশের এক কর্তাও সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে দায় কার? না, তার উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Convict Parole ডোমকল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE