চিকিৎসা চলছে। নিজস্ব চিত্র
তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটিই হাসপাতাল, বড়ঞা ব্লকের সুন্দরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ময়ূরাক্ষী নদীর পাশে সুন্দরপুর গ্রামের ওই হাসপাতালে এক সময় ছিল দিবারাত্রের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী। অবস্থা বদলাতে সময় লাগেনি। চিকিৎসক কমে এক সময তা হয় পড়ল চিকিৎসক শূন্য। কিন্তু করোনার সৌজন্যে সেই হাসপাতালে এখন ফের আগের মতো গমগমে। নিয়ম করে ছ’দিন সকাল-দুপুর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আসছেন। ভিড় করছেন পাঁচ গ্রামের রোগী। ফের যেন হারানো ভরসা ফিরে পেয়েছে সুন্দরপুর হাসপাতাল। হাজির থেকে সাধারণ মানুষের মনে ভরসা জোগাচ্ছেন তাঁরা। করোনা আতঙ্কে রোগীর বিড় বাড়লেও যথাযথ চিকিৎসাও পাচ্ছেন তাঁরা। সুন্দরপুরের বলাই সাহা বলছেন, ‘‘ক’বছর ধরে যে ভূতের বাসা হয়েছিল বাড়িটা, সেটা যেন আবার হাসপাতালের চেহারা ফিরে পাচ্ছে।’’ ওই হাসপাতালটি বড়ঞা ব্লকের সুন্দরপুর ও কুরুন্নরুন গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা ছাড়াও ভরতপুর ১ ব্লকের গড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা নির্ভর করেন। রোজ সাড়ে তিনশো থেকে চারশো রোগী হাসপাতালে আসেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা তাতেই খুশি। কিন্তু মাঝে কয়েক বছর ধরে ফার্মাসিস্টের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই দিনগুলো এখনও মনে আছে গ্রামের মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস মণ্ডল বলেন, ‘বছর খানেক আগে বঁটিতে হাত কেটে গেলেও সেলাই করাতে পারিনি, ছুটতে হয়েছিল কান্দি।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তিনটি অঞ্চলের থেকে গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১২ থেকে ১৫ কিলোমিটার। নদীর ধারে অঞ্চলগুলি হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা রাতে রোগ নিয়ে হাসপাতালে যাতায়াত করার সাহস পাচ্ছেন না। তাই ওই হাসপাতালে সারাক্ষণ চিকিৎসক থাকলে বাসিন্দারা উপকৃত হতে পারেন, এমন দাবি ছিল বহুদিনের।
পিন্টু শেখ, সাধন দাসরা বলছেন, ‘‘রোগ তো দিন দেখে আসে না। লকডাউনের কারণে যানবাহন বন্ধ, ফলে গ্রামীণ হাসপাতালে যাতায়াত করাও এখন সমস্যার। সুন্দরপুর হাসপাতালটা এই অবস্থায় সেজেগুজে না উঠলে মানুষের যে কী অবস্থা হত!’’
সুন্দরপুরে অঞ্চল প্রধান মেহেরনিকা বিবি বলেন, “চিকিৎসক নিয়মিত হাসপাতালে আসার জন্য বাসিন্দারা উপকৃত হচ্ছেন। করোনার আগে সপ্তাহে দু’দিন চিকিৎসক এলেও এখন প্রতিদিন তাঁরা আসছেন।” স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে করোনা ভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত হয়ে না পড়েন, সে দিকে নজর রেখে নিয়মিত চিকিৎসক যাচ্ছেন বলে দাবি বড়ঞা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চয়ন হীরার। বলেন, “প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যাতে নিয়মিত চিকিৎসক যান, সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। চিকিৎসকের অভাব আছে। প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক না থাকার কারণে সমস্যা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy