ফাইল চিত্র।
দিনটা হতেই পারত ধর্ম সমন্বয়ের দুর্দান্ত নজির। একই দিনে অক্ষয় তৃতীয়া এবং ইদ-উল-ফিতর। জোড়া উৎসবের যুগলবন্দির খুশিতে হিন্দু-মুসলমান এক সঙ্গে মেতে উঠতে পারতেন। গড়তেই পারত অনন্য দৃষ্টান্ত। কিন্তু হল না। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এমন ভাবে দেশ জুড়ে আছড়ে পড়ছে যে, খুশির ইদের আনন্দ যেমন ম্লান হয়ে থাকল তেমনই এ বারের অক্ষয় তৃতীয়া রয়ে গেল আপাত অর্থে মামুলি এক বাণিজ্যিক তিথি হিসাবেই। যে দিন কিছু ব্যবসায়ী তাঁদের বকেয়া হিসাবের খাতা ‘হাল’ করবেন।
ব্যবসায়ীদের একটি অংশের কাছে এখন পয়লা বৈশাখের বিকল্প হিসাবেই আসে অক্ষয় তৃতীয়া। দোকানে দোকানে গণেশ পুজো। সেই সঙ্গে যাঁরা ধারবাকিতে কেনাকাটা করেন তাঁদের চিঠি পাঠিয়ে নিমন্ত্রণ করে বকেয়া হিসাব মেটানোর কথাটা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। উৎসব সন্ধ্যায় পাওনা টাকা আদায়ের ফাঁকে শরবত, মিষ্টিতে একটু আপ্যায়নে সম্পর্কটাও ঝালিয়ে নেওয়া। এ বার একই দিনে উদ্যাপন হচ্ছে ইদও। কিন্তু চারদিকে এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তাতে করে নমাজ শেষ পরস্পরকে বুকে জড়িয়ে ধরে উষ্ণতায় ভরিয়ে দেওয়া কার্যত অসম্ভব। ফলে শুক্রবার হিন্দুরা যেমন নিয়মরক্ষার অক্ষয় তৃতীয়া পালন করবেন সেই ভাবেই পালিত হবে ব্যতিক্রমী ইদ।
এ বার ইদের উদ্যাপন নিয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে একাধিক সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়। তাতে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, সম্পাদক ছাড়াও ছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। ইমামেরা জানিয়েছেন, এ বারের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিত দূরত্ব বজায় রেখে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত হয়ে ইদের নমাজ পড়া হবে। কেউ মসজিদে, কেউ ইদগা, কেউবা নিজের বাড়িতে যেন নমাজে যোগ দেন সেই আবেদন সব পক্ষই করেছেন। পাশাপাশি এ বছর নমাজের পর আলিঙ্গন বন্ধ রাখা বা বড় করে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সংক্রমণের তীব্রতা বুঝে নিয়ন্ত্রিত ভাবে ইদ পালন করার বিষয়ে ইমামেরা সহমত পোষণ করেন।
এই প্রসঙ্গে মহীশুরার বাসিন্দা নিজাম শেখ বলেন, “খুশির ইদের খুশি এ বার নেই। মানুষের মনে ভয় এবং হাতে টাকা পয়সা নেই। ফলে নতুন পোশাক অনেকেই কিনতে চাননি। কেন না ফের ট্রেন বন্ধ। ব্যবসা হচ্ছে না। এই অবস্থায় লোকে হাতের সামান্য টাকা ছাড়তে চাইছে না। ফলে খুবই সাদামাটা ভাবে ইদ হবে।” অন্য দিকে নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “এখন মানুষের বেঁচে থাকাই বড় প্রশ্ন। উৎসব পালনের সময় এখন নয়। যাদের পুজো করতে হয় তাঁরা ওই নিয়মে বাঁধা সময়ের মধ্যে নমো নমো করে সেরে নেবেন। এর বেশি কিছু হবে না”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy