প্রতীকী ছবি।
আমরা জানি করোনার মতো একটি ভয়ঙ্কর জীবাণু মানুষের লালারস, শ্বাসকণা থেকে অন্য মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। কিন্তু কোনও চিকিৎসকই খবরের কাগজ থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে এই সাবধান বাণী জানাননি। আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ঘোষণা করেছে—কোনও ভাবেই খবরের কাগজের মাধ্যমে করোনার জীবাণু সংক্রমিত হয় না। কিন্তু সব জানা সত্ত্বেও সংস্কারবশত লকডাউনের প্রথম দিকে বহরমপুর শহরেও কয়েক দিন কাগজ হাতে পাইনি। ফলে সে সময় খুব মন খারাপ হয়েছিল। কয়েকদিন পরে অবশ্য স্বাভাবিকভাবে কাগজ হাতে পাই। খবরের কাগজ থেকে করোনা ছড়াতে পারে না। তাই আনন্দবাজার পত্রিকা (বছরের পর বছর যার গ্রাহক আমি) এই সময় না পড়ে থাকার কথা ভাবতেই পারিনি। জেলার খবর পড়ব না? পত্রিকার সম্পাদকীয় কলম না পড়ে থাকা যায়? কী করে থাকব রবিবাসরীয় গল্প না পড়ে? শুধু আমি নই, আমার পরিচিত অনেকেই কাগজ নিয়মিত পড়ছেন।
যাঁরা সংবাদপত্র পড়তে পছন্দ করেন, তাঁদের এই করোনা জীবাণু সংবাদপত্র পাঠের নেশা থেকে বিরত করতে পারেনি এবং পারবেও না। আমার বেশ মনে আছে ১৯৭৫ সাল, তখন আমি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র, খবরের কাগজের খেলার পাতা পড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মাল। কাগজ না পড়লে দিনটা যেন অপূর্ণ থেকে যায় মনে হয়।
রাজ্যের বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে বাংলা পত্রিকা না পাওয়ার ফলে প্রতিদিনের খবর পুঙ্খানুপুঙ্খ জানতে পারতাম না, ফলে মনে হত কিছু একটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। পত্রিকা দফতর যেদিন ছুটি থাকে, তার পরের দিন পত্রিকার কোনও সংস্করণ প্রকাশিত হয় না। আমরা যাঁরা পত্রিকার জন্য প্রত্যেক দিন অপেক্ষা করে থাকি সেদিন তাঁদের কাছে মন খারাপের দিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই অকারণে খবরের কাগজ থেকে দূরে থাকতে চাই না।
(লেখক বহরমপুরের একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy