কোভিশিল্ড টিকা খুবই কম মজুত রয়েছে। তার উপরে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী এই প্রতিষেধকটির দু’টি টিকার মধ্যেকার ব্যবধান ৮৪ দিন করতে বলা হয়েছে। তাই বহরমপুরে কার্যত বন্ধই আছে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ়। কোভিশিল্ড মজুতের পরিমাণ যে খুবই কম, সেটা মেনে নিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেই। একই সঙ্গে জানালেন, যে টিকা হাতে আছে তা দিয়ে এখন হকার, সংবাদকর্মী, পরিবহণ কর্মীদের মতো কোভিড যোদ্ধাদের প্রথম ডোজ় দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রথম ডোজ় দেওয়া নিয়েও এ দিন বিপত্তি হয়। জেলার পুরসভাগুলির উদ্যোগে হকারদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। অভিযোগ, সেখানে অনেকেই হকার পরিচয়পত্র না থাকা সত্ত্বেও ভিড় করছেন। বৃহস্পতিবার বহরমপুর পুরসভায় তালিকায় নাম না থাকায় বিক্ষোভও দেখান হকারদের অনেকে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ ডাকতে হয় বলে খবর। পরে পুর প্রশাসক জয়ন্ত প্রামাণিক দাবি করেন, “৯১২ জনের তালিকার বাইরের সাধারণ মানুষ প্রতিষেধক নিতে এসেছিলেন। প্রতিষেধক না পেয়ে তাঁরাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।” তবে হকারদের তালিকা কোনও কাউন্সিলর করেননি জানিয়ে তিনি বলেন, “গত বছর লকডাউনের পর কাজ হারানো হকারদের দু’ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করেছিল রাজ্য সরকার। সেই তালিকা ধরেই তাঁদের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে।”
দ্বিতীয় ডোজ়ের ক্ষেত্রে অবশ্য বিক্ষোভের অবকাশ ছিল না। কারণ, কোভিশিল্ড টিকার অভাবে গত কয়েক দিন ধরেই টিকা কেন্দ্রগুলিতে ভিড় উধাও। এ দিন এই প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “প্রতিষেধক মজুত না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’ তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে হাতে ৪৪ হাজার মতো প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় আছে, যার মধ্যে ৩৮ হাজার কোভিশিল্ড। সেই টিকা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোভিড যোদ্ধাদেরই দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের কয়েক জন বলছেন, এর মধ্যে কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকাতেও ভ্রান্তি ছড়িয়েছে। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, কোভিশিল্ড প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের মধ্যে ৮৪ দিনের ফারাক হতে হবে।
কিন্তু একই সঙ্গে বলা হয়েছে, যাদের নাম নথিভুক্ত করা হয়ে গিয়েছে, তাঁরা ৪২ দিন পরেও দ্বিতীয় ডোজ় নিতে পারেন। কিন্তু যেখানে প্রথম ডোজ় নিলেই নাম নথিভুক্ত হয়ে যায়, সেখানে তো সকলেরই ৪২ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ় প্রাপ্য। অনেক উপভোক্তা এই নিয়ে দাবিও করছেন টিকা কেন্দ্রে। স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের কথায়, দ্বিতীয় দফার টিকাকরণ শুরুর আগে সেই জটিলতাও কাটানো জরুরি।
কোভ্যাক্সিনের অবশ্য দু’টি ডোজ়ের মধ্যে ফারাক একই রয়েছে। ২৮ দিন। তাই এ দিন যা লাইন ছিল, সবই কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ়ের। প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ় কেন্দ্রের নিয়ম অনুয়ায়ী তিন থেকে চার মাস পরেই পাবেন। এখন কো-ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। সেটাও অপ্রতুল।”