Advertisement
E-Paper

স্কুলে নিভৃতবাস নিয়ে সাংসদের বার্তায় বিভ্রান্তি

ওই চারটি ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের গৃহবাস বা হোম কোয়রান্টিন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনস্টিটিউশন্যাল কোয়রান্টিনে রাখা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৫:০৭
কেরল থেকে কৃষ্ণনগরে ট্রেনে ফিরলেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। শুক্রবার, কৃষ্ণনগর স্টেশনের বাইরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

কেরল থেকে কৃষ্ণনগরে ট্রেনে ফিরলেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। শুক্রবার, কৃষ্ণনগর স্টেশনের বাইরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

প্রশাসন কয়েক দিন আগেই জানিয়েছিল, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাডু ও দিল্লি থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদেরই একমাত্র সরাসরি স্কুলের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হবে। কারণ, ওই রাজ্যগুলি করোনার ‘হটস্পট’।

ওই চারটি ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের গৃহবাস বা হোম কোয়রান্টিন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনস্টিটিউশন্যাল কোয়রান্টিনে রাখা হবে। কিন্তু গত ২৮মে ফেসবুক পোস্টে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় প্রশাসনের সেই কোয়রান্টিন প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

ওই ভিডিও পোস্টে সাংসদ বলেছেন, ‘‘যে আসবে, সে স্কুলেই থাকবে। কেউ বাড়ি যাবে না।’’ আরও বলেছেন, ‘‘যাঁরা ফিরছেন, ট্রেন আসছে কৃষ্ণনগরে, প্রত্যেকটা ব্লকে-প্রত্যেকটা জিপিতে লোকাল স্কুলে রাখা হবে। একটা মানুষও বাড়ি যাবে না।’’ এই বার্তায় কোথাও আলাদা করে শুধু মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু ও দিল্লি থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা বলা নেই। ফলে, ওই চারটি ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদেরও স্থানীয় স্কুলেই কোয়রান্টিনে থাকতে হবে কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। অস্বস্তিতে প্রশাসনিক কর্তারা এবং বিভ্রান্ত ওই শ্রমিক ও তাঁদের বাড়ির লোক। তাঁরাও বুঝতে পারছেন না যে কেরল বা অন্য কোনও রাজ্য থেকে ফেরার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের সকলকেই স্কুল বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হবে কিনা।

ইতিমধ্যে গত বৃহস্পতিবার কেরল থেকে একটি ট্রেন এসেছে। সেটি কৃষ্ণনগরের বদলে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল হওয়ায় চলে গিয়েছে নিউ জলপাইগুড়িতে। সেখানে নদিয়ার ৭০ জন ছিলেন। আবার শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটেয় আরেকটি ট্রেন কেরল থেকে ঢুকেছে কৃষ্ণনগরে। সেখানে ১২২৯ জন যাত্রী ছিলেন। তার মধ্যে নদিয়ার লোক ছিলেন ৮৬ জন। ২০টি বাসে করে তাঁদের নিয়ে আসা হয় বাহাদুরপুর ট্রাক টার্মিনাসে। সেখান থেকে ৪০টি বাস ও ২০টি ছোট গাড়িতে তাঁদের মুর্শিদাবাদ, রায়গঞ্জ, মালদহের পাশাপাশি নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এক প্রশাসনিক কর্তার জানান, ওই চারটি রাজ্য বাদ দিয়ে অন্য রাজ্য থেকে আসা কোনও শ্রমিকের বাড়িতে আলাদা ঘর বা না-থাকলে তাঁকে স্কুলে রাখ হবে। কিছু ব্লকে আধিকারিকেরা চেষ্টা করছেন স্কুল বাড়িতেই বেশি করে শ্রমিকদের রাখতে। এতে নজরদারির সুবিধা হয়। তা বলে যাঁরা যেখান থেকেই ফিরুন না কেন, সকলকে স্কুল বাড়িতে রাখাটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয় মোটেই। তাঁর কথায়, “কে কোথায় কী বলছেন সেটা নিয়ে বলতে পারি না। প্রশাসন চলে সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে। তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতে আগ বাড়িয়ে কারোরই মন্তব্য করা উচিৎ নয়।” এ ব্যাপারে মহুয়া মৈত্রের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

শুক্রবার কৃষ্ণনগরে যে ট্রেন ঢুকেছে তাতে বিভিন্ন জেলার প্রায় ১২২৯ যাত্রী ছিল। কৃষ্ণনগর ঢোকার আগে বর্ধমান ও হাওড়ায় যাত্রী নামানো হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। কৃষ্ণনগর স্টেশনে ১৪টি কাউন্টার করা হয়েছিল। সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরা যাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। বুধবার সন্ধ্যে ছ’টা নাগাদ কেরলের কোজিখোর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে। দু ধরনের রুটি, জল ও অন্য খাবার দেওয়া হয় যাত্রীদের হাতে। পরে কৃষ্ণনগর স্টেশনে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত চারটি স্টেশনে ট্রেন থামে। প্রতিটি স্টেশনে তাঁদের ভেজ বিরিয়ানি, জলের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এই ট্রেনের এক যাত্রী ধুবুলিয়ার দীপচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফা মণ্ডল বলেন, “ট্রেনে কোনও সমস্যা হয়নি। খাবার ও জল যথেষ্ট ছিল। শৌচাগারেও জলের ব্যবস্থা ঠিকঠাক ছিল।”

Special Train Kerala Krishnanagar Coronavirus Lockdown Migrant Labourer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy