Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নিকষ আঁধার শ্মশানে মরেও বুঝি শান্তি নেই

দিনকয়েক আগে আরবপুর শ্মশানে শবদাহ করতে এসেছিলেন কেচুয়াডাঙার লোকজন। তাঁরা সমস্যায় পড়েছিলেন সন্ধ্যার পরে। শ্মশানে কোনও আলো নেই। এলাকা থেকে হ্যাজাক নিয়ে চিতা সাজানোর কাজ শুরু হয়। ঠিক তখনই বৃষ্টি নামে। সঙ্গে ঝড়।

আবর্জনা: করিমপুর শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র

আবর্জনা: করিমপুর শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ১২:৩০
Share: Save:

দিনকয়েক আগে আরবপুর শ্মশানে শবদাহ করতে এসেছিলেন কেচুয়াডাঙার লোকজন। তাঁরা সমস্যায় পড়েছিলেন সন্ধ্যার পরে। শ্মশানে কোনও আলো নেই। এলাকা থেকে হ্যাজাক নিয়ে চিতা সাজানোর কাজ শুরু হয়। ঠিক তখনই বৃষ্টি নামে। সঙ্গে ঝড়। এ দিকে শ্মশানে কোনও ছাউনি নেই যে লোকজন গিয়ে দাঁড়াবেন। কেচুয়াডাঙার প্রাণেশ সাহা বলছেন, ‘‘সারাজীবন তো কষ্ট করেই বাঁচতে হয়। মরার পরেও যে কষ্ট হবে, কে জানত!’’

বেলডাঙার কুমারপুর শ্মশানঘাটের অবস্থাও তথৈবচ। বর্ষায় সময় সেই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ইলেকট্রিক চুল্লি তো দূরের কথা আলো পর্যন্ত নেই। শবযাত্রীদের জন্য ছাউনি একটা আছে বটে। কিন্তু প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে তা থাকা না থাকা দুই-ই সমান। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচটি দেহ এই শ্মশানে দাহ করা হয়। রাতে ঝড়-বৃষ্টি হলে চিতা ভিজে যায়। দাহ হতে সময়ও লাগে। অনেক সময় দেখা যায়, আধপোড়া দেহ রেখেই চলে গিয়েছেন শবযাত্রীরা।

গাড়ির পিছনে লেখা থাকে—‘সুখ স্বপনে, শান্তি শ্মশানে’। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু শ্মশানে শান্তি তো দূরের কথা, দুর্ভোগের অন্ত নেই। স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ সরকার জানান, স্নানের কোনও ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে শবযাত্রীদের দূরে গিয়ে স্নান করতে হয়। বছর দেড়েক আগে বিধায়ক তহবিলের টাকায় শ্মশানে একটি উচ্চ বাতিস্তম্ভ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মাস ছয়েক পর তা বিকল হয়ে পড়ে।

শিকারপুর, মানিকপুর শ্মশানের অবস্থা আরও খারাপ। মাথাভাঙা নদীতে শ্মশানে ছাউনি নেই। তেহট্টের মহকুমাশাসক সুধীর কোন্তম জানান, কবরস্থান বা শ্মশানের উন্নয়নের জন্য সরকার ‘বৈতরণী’ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করছে। বেহাল শ্মশানগুলির খোঁজ খবর নিয়ে সেগুলি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেলডাঙার পুরপ্রধান ভরতকুমার ঝাওর জানান, কুমারপুরের ওই শ্মশান সুজাপুর-কুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। কিন্তু সমস্যার কথা জানতে পেরে বিষয়টি রাজ্য সরকারের নজরে আনা হয়েছে। বৈদ্যুতিক চুল্লি পুরসভাই করে দেবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ওই পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথাও হয়েছে। শিগ্‌গির কাজও শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crematorium Clean Enviornment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE