E-Paper

গান্ধী মেমোরিয়াল যেন শুধুই 'নেই রাজ্য'

স্বাধীনতার পর কল্যাণীতে তৈরি হয় তিনশো শয্যার রাজ্যের একমাত্র এই সরকারি হৃদরোগের হাসপাতাল।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০১
গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র

গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র Sudev Das

রোগী আছে। চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো রয়েছে। অথচ নেই চিকিৎসক। ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। কিন্তু সেখানে নেই শুধু মেডিক্যাল অফিসার। রাজ্যের একমাত্র হার্টের হাসপাতাল কল্যাণীর গান্ধী মেমোরিয়াল এখন শুধুই যেন 'নেই রাজ্য'। কোটি কোটি টাকার যন্ত্রাংশ থাকলেও, কার্ডিও থোরাসিক ভাসকুলার সার্জনের অভাবে এই সরকারি হাসপাতালেই বন্ধ ওপেন হার্ট সার্জারি।দিনের পর দিন সপাতালে এসে বাধ্য হয়ে অনেক রোগীকেই পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসিইউ-র মেডিক্যাল অফিসার ও জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসারের আটটি পদ শূন্য রয়েছে। চলতি অগস্ট ও নভেম্বর মাসে অবসর নেবেন আরও চারজন চিকিৎসক। ফলে বছর শেষে মেডিক্যাল অফিসারের এক ডজন পদ শূন্য হতে চলেছে। এছাড়াও হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে বর্তমানে নেই কোনও মেডিকেল অফিসার। কর্মী সঙ্কট রয়েছে প্যাথলজিস্ট ও টেকনিশিয়ানের ক্ষেত্রেও। বছর দুয়েক আগে হাসপাতালে ২৪ শয্যার নতুন আইসিসিইউ চালু করার কথা থাকলেও তা চালু করা হয়নি।

স্বাধীনতার পর কল্যাণীতে তৈরি হয় তিনশো শয্যার রাজ্যের একমাত্র এই সরকারি হৃদরোগের হাসপাতাল। জানা গিয়েছে, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ছাড়াও পূর্ব ভারতের একাংশের মানুষ এক সময় নিখরচায় হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। পরবর্তীতে সময় যত গড়িয়েছে হাসপাতালের পরিকাঠামোর ততই অবনতি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২০২১ সালের আগে চিকিৎসকের অভাবে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল ওপেন হার্ট সার্জারি। ওই বছর শেষের দিকে একজন কার্ডিও থোরাসিক চিকিৎসক দিয়ে কোনওমতে ওই সার্জারি বিভাগ চালু করে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু সেই চিকিৎসকও ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে অবসর নিয়েছেন। তারপর থেকেই হাসপাতালে বন্ধ ওপেন হার্ট সার্জারি। কেবল এনজিওগ্রাফি, পেসমেকার বসানোর মতো পরিষেবা চালু রয়েছে। হাসপাতালের সুপার আশিস মৈত্র বলেন, "ওপেন হার্ট সার্জারি ক্ষেত্রে কার্ডিও থোরাসিক ভাসকুলার সার্জেনের প্রয়োজন। অথচ এ ধরনের চিকিৎসক হাসপাতালে না থাকায় ওই অপারেশন সম্ভব হচ্ছে না।"

বছর দুয়েক আগে হাসপাতালে ২৪ শয্যার আইসিসিইউ বিভাগ তৈরি হলেও তা চালু করা যায়নি। প্রায় কোটি টাকার যন্ত্রাংশ পড়ে নষ্ট হচ্ছে। পুরনো পরিকাঠামোয় থাকা ১২ শয্যার আইসিসিইউ ওয়ার্ডের উপর নির্ভর করে কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার গুরুতর অসুস্থ রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার বাসিন্দা তনুময় মণ্ডল। তাঁর কথায়, "হাসপাতালে ভর্তির পর একদিন কেটে গেলেও চিকিৎসা কিছুই মেলেনি। পরে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেওয়া হয়েছে।" চিকিৎসক, ব্লাড ব্যাঙ্কের ডিক্যাল অফিসার, প্যাথলজিস্ট, টেকনিশিয়ান সব বিভাগেই কর্মী সঙ্কট। এই অবস্থা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? হাসপাতালের সুপারের কথায়, "বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি দেখছে। আশা করছি, নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalyani

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy