Advertisement
E-Paper

অনলাইনেই আস্থা ক্রেতাদের, কপাল পুড়ছে দোকানির

শুনশান দোকানে খরিদ্দারের জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে আছেন দোকানদার। তাঁরা জানাচ্ছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে ইদের বাজারও জমেনি। ভেবেছিলেন, দুর্গাপুজোর বাজার ঘাটতি পুষিয়ে দেবে। কিন্তু কোথায় কী!

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:০০
পুজোর আর দেড় মাসও বাকি নেই। এখনও দেখা নেই ক্রেতার। শুকনো মুখে বসে দোকানি। নবদ্বাপে। নিজস্ব চিত্র

পুজোর আর দেড় মাসও বাকি নেই। এখনও দেখা নেই ক্রেতার। শুকনো মুখে বসে দোকানি। নবদ্বাপে। নিজস্ব চিত্র

পুজোর এর এক মাসও নেই। অথচ, এখনও বাজার ঝিমিয়ে রয়েছে! দুপুর গড়ালেই হাতে বিগশপার নিয়ে দোকানে ঝাঁপিয়ে পড়া ক্রেতার দলের টিকিটিও দেখা যাচ্ছে না। দুশ্চিন্তায় ঘাম জমছে বিক্রেতাদের কপালে। বিজ্ঞাপন-প্রচার রয়েছে, কিন্তু পুজোর বাজারে কারও যেন কোনও আগ্রহ নেই।

সেপ্টেম্বর মাস শুরু হওয়ার পর-পরই শনি-রবিবার ছিল। মাস পয়লায় বাঙালি বউ-বাচ্চা নিয়ে পুজোর বাজারে নামবে, সেটাই প্রত্যাশিত। ফুটপাথ থেকে বাড়তে-বাড়তে রাস্তায় নেমে আসা পসরা, রাস্তায় যানজট, দোকানির হাঁকডাক, দরদাম, কেনাকেটা করে ক্লান্ত ক্রেতার জমিয়ে খাওয়াদাওয়া—এই না-হলে পুজোর বাজার! এই সব দেখেই তো স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন ছোটবড় ব্যবসায়ীরা। ভরসা পাবেন, যাক পুজোর গন্ধ এসেছে! রোজগারের মরসুম সমাগত। কিন্তু ভাবগতিক দেখে তাঁরা হতাশ।

শুনশান দোকানে খরিদ্দারের জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে আছেন দোকানদার। তাঁরা জানাচ্ছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে ইদের বাজারও জমেনি। ভেবেছিলেন, দুর্গাপুজোর বাজার ঘাটতি পুষিয়ে দেবে। কিন্তু কোথায় কী! নবদ্বীপের প্রতিষ্ঠিত বস্ত্র ব্যবসায়ী রাজেশ অগ্রবাল যেমন বলেন “ঠিক এক মাস পর পুজো। এই সময়ে কেনাকাটার ট্রেন্ডটা অনুমান করা যায়। কিন্তু এ বছর সেপ্টেম্বরের মাইনে হাতে পেয়েও পুজোর কেনাকাটা শুরু করেননি মানুষ। ফলে এখনও পর্যন্ত বাজার কেমন জমবে কিচ্ছু আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে না জানি না আদৌ জমবে কিনা।”

শহরের এক রেডিমেড ব্যবসায়ী দীপক সাহা-র কথায়, “পুদোর মুখে বাজারের এমন হাল সচরাচর দেখা যায় না। অন্যান্য বার ১৫ অগসস্টের পরই বাজার জমে ওঠে।” ব্যবসায়ীরা এর জন্য চিহ্নিত করেছেন বেশ কিছু কারণকে। জিএসটির ফলে জিনিসের দাম বেড়েছে। তেমনই অনলাইনে কেনাকাটার প্রতি ঝোঁক বেড়ে যাওয়া এবং ছোট শহরেও শপিংমলের সংখ্যাবৃদ্ধি এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি করে কেউ এখন আর রাস্তায় ঘুরে কিনতে চান না। বাড়িতে বসে অনলাইনে কেনা বা শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত শপিং মলে ঘুরে কিনতে তাঁরা স্বচ্ছন্দ। এতেই আমাদের কপাল পুড়েছে।’’ নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাসের কথায়, “নবদ্বীপ বলে নয়, সর্বত্র পুজোর বাজারের একটা বড় অংশ গ্রামীণ ক্রেতাদের উপর নির্ভর করে। পাটে প্রত্যাশামতো দাম না-পেয়ে পুজোর বাজারে তাঁরা কতটা আসবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।”

তবে ব্যবসায়ীরা সকলেই একটা বিষয়ে একমত। অনলাইন কেনাকাটা মফস্বল শহরগুলিতে বাজারের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সেখানে প্রচুর ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ক্যাশ অন ডেলিভারি’র সুবিধা মিলছে। বাড়ি বা অফিসে জিনি, পৌঁছে যাচ্ছে, আবার পছন্দ না-হলে বাড়ি বসেই ফেরত দেওয়ার সুযোগ থাকছে।’’ রেডিমেড পোশাকের ব্যাবসায়ী প্রদীপ মজুমদার জানাচ্ছেন “অনলাইন স্টোরের পোশাকের নমুনা দেখিয়ে অনেক ক্রেতা জানতে চাইছেন, ওই জিনিস মিলবে কিনা। এরা বেশির ভাগই অল্পবয়সী ক্রেতা। কিন্তু ওই ধরনের জিনিস তো দোকানে পাওয়া যা য়না। ফলে ক্রেতা ফিরে যাচ্ছে।”

Pujo Shopping Online Business Nabadwip নবদ্বীপ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy