E-Paper

বিছানায় পড়ে স্ত্রীর দেহ, স্বামী ঝুলছেন ফাঁসে

বুধবার সকাল তখন সাড়ে দশটা। অন্যান্য দিনের মতো শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুলিশ আবাসনের পিছনে থাকা হেমন্ত সরকারের বাড়িতে এসেছিলেন পরিচারিকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩৬
দম্পতির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে পুলিশ। বুধবার রানাঘাটে।

দম্পতির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে পুলিশ। বুধবার রানাঘাটে। ছবি সুদেব দাস।

বিছানায় পড়ে আছে স্ত্রীর দেহ। গলায় দড়ি জড়ানো। সেই ঘর রান্নাঘরে যাওয়ার রাস্তা। রান্নাঘরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে গৃহকর্তার দেহ। বুধবার সকালে এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল রানাঘাটের কোর্টপাড়া এলাকা।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম হেমন্ত সরকার (৭২) ও প্রতিমা সরকার (৬৭)। প্রাথমিক তদন্তের পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন দম্পতি।

বুধবার সকাল তখন সাড়ে দশটা। অন্যান্য দিনের মতো শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুলিশ আবাসনের পিছনে থাকা হেমন্ত সরকারের বাড়িতে এসেছিলেন পরিচারিকা। দরজা ভিতরের দিক থেকে বন্ধ থাকায় তিনি ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু কোনওরকম সাড়া না পেয়ে হেমন্তের ভাই শ্যামলের বাড়িতে গিয়ে দরজা না খোলার বিষয়টি জানান তিনি। তারপরে প্রতিবেশীরা জানলা দিয়ে উঁকি দিলে দেখতে পান, বিছানায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। ঘটনাস্থল থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে রানাঘাট থানা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। শুরু হয় দরজা ভাঙার কাজ। দরজা ভেঙে দু’জনকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খাওয়ার টেবিল রাখা একটি ডায়েরি পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ডায়েরির পাতায় লেখা ছিল, ‘‘রানাঘাট ট্রাক ওনার অ্যাসোসিয়েশন। পার্থদাকে বলব আমাদের দু’জনের শ্রাদ্ধের ব্যবস্থা যেন করে দেয়।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত হেমন্ত ট্রাক ওনার অ্যাসোসিয়েশনে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। দম্পতির একমাত্র ছেলে প্রশান্ত ২০১২ সালে বিয়ে করেন। কর্মসূত্রে তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে কখনও হায়দরাবাদ, কখনও কলকাতা, কখনও আবার দিল্লিতে থাকেন। মাঝেমধ্যে ছেলে আসতেন বাবা-মাকে দেখতে।

মৃত হেমন্তর ভাই শ্যামল সরকার বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে বৌদির পায়ে অপারেশন হয়। তার পর থেকে তিনি বিছানা থেকে নামতে পারতেন না। যাবতীয় কাজ দাদাকেই করতে হত। এ সব মিলিয়েই হয়তো দাদা মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন। সেই কারণে হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মানসিক অবসাদের কারণে রাতে মদ্য পান করে নিজেই স্ত্রীকে গলায় দড়ি জড়িয়ে খুনের পর আত্মঘাতী হয়েছেন বৃদ্ধ। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। দম্পতির ছেলেকেও খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন। রানাঘাটে ফিরলেই দেহ তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy